ইসরাইলের কাপুরুষিত হামলা, কঠিন প্রত্যাঘাত ইরানের
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০২৫, ৮:৫৭:১৫ অপরাহ্ন
ইসরায়েলী সেনা দফতরে হামলা, ৩ বিমান ভূপাতিত
জালালাবাদ রিপোর্ট: ইসরায়েলী হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রত্যাঘাত করেছে ইরান। সরাসরি তেল আভিভে অবস্থিত ইসরায়েলি সেনার সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘লৌহঢাল’ও সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেনি।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচ দফায় ইসরায়েলের দিকে দেড় শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে তেহরান। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং ইরানি মিডিয়ার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে অন্তত তিন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধ শতাধিক। ইসরায়েলের তেল আবিব, জেরুজালেমসহ বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণ শোনা গেছে। বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। রিশন লেজিওন ও আশপাশের এলাকায় মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে। জরুরি উদ্ধাকারী বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। এদিকে, ইরানি হামলায় ইসরায়েলের একাধিক সামরিক ঘাঁটি ও বিমান ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। তাছাড়া তেহরান হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, তারা হামলা আরও জোরালো করবে ও ইসরায়েলকে রক্ষার চেষ্টাকারী যেকোনো দেশের ঘাঁটি তাদের লক্ষ্যবস্তু হবে।
ইসরায়েলের মোট তিনটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে তেহরান। পাশাপাশি দুজন ইসরায়েলি পাইলটকে আটক করারও দাবি করা হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের ৭ জন সৈন্য আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর আবারও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত সংঘাত শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এটাই প্রথম ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা।
এদিকে, ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে তেহরানের প্রতি প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দেশটির পার্লামেন্টে বলেন, পাকিস্তান ইরানের পাশে আছে। ইরানের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতা করব পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন, ইরান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনকে টার্গেট করেছে ইসরায়েল। মুসলিম দেশগুলো এখনই যদি এক না হয়, তাহলে সবার পরিণতি একই হবে।
ইসরাইলি যুদ্ধবিমান বিমান ও চারটি ড্রোন ভূপাতিত: ইসরাইলের আরো একটি যুদ্ধবিমান বিমান ও চারটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে ইরান। শনিবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছেন, লোরেস্তান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর বলেছেন, খোরামাবাদের আকাশসীমায় চারটি ইসরাইলি ড্রোন এবং একটি ছোট বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, মার্কিন প্রযুক্তিনির্ভর লকহিড মার্টিনের তৈরি দু’টি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ ‘লাইটনিং টু’ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে ইরান। সেই সাথে ভূপাতিত হয়েছে অসংখ্য ‘মাইক্রো অ্যারিয়াল ভেহিকলস’ বা এমএভি। এগুলো মূলত ড্রোন প্রযুক্তিনির্ভর চালকহীন খুদে আকাশযান।
বিমান দু’টির একটি ধ্বংস হওয়ার পর তার পাইলটকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। আটক পাইলট একজন নারী, এমনটাই নিশ্চিত করেছে ইরানি বাহিনী। এ অভিযানকে ‘পূর্ণ সফল’ বলেও আখ্যা দেয়া হয়েছে। তেহরান বলছে, এটি ইরানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তুতির প্রমাণ।
এরআগে শুক্রবার ইরানজুড়ে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিশোধ নিতে হামলা অব্যহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। তাদের এই হামলা ঠেকাতে সহায়তা করলে ইসরাইলি মিত্রদের ঘাঁটিতেও হামলার হুশিয়ারি দিয়েছে তার। অপরদিকে ইসরাইল হুমকি দিয়েছে ইরান ক্ষেপনাস্ত্র হামলা বন্ধ না করলে তেরহান জালিয়ে দেওয়া হবে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, দুই দেশের মধ্যে পুরো মাত্রার যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
হুমকি পাল্টা হুমকি: ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলা ঠেকাতে সহায়তা করলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের ঘাঁটি ও জাহাজে হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি এ কথা জানিয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বা ফ্রান্স হস্তক্ষেপ করলে, এই দেশগুলোর আঞ্চলিক সামরিক ঘাঁটি ও নৌবাহিনীর জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে- এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান।
অপরদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ শনিবার ইরানকে নতুন হামলা নিয়ে হুঁশিয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, ইরান যদি ইসরায়েলে আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তবে পাল্টা হামলা চালিয়ে তেহরানকে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। এএফপির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কাৎজকে উদ্ধৃত করে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরানের স্বৈরশাসক দেশটির সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। তিনি এমন পরিস্থিতি তৈরি করছেন, যার জন্য ইসরায়েলের সাধারণ মানুষদের —বিশেষ করে তেহরানের বাসিন্দাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘যদি (আয়াতুল্লা আলী) খামেনি ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যেতে থাকে, তবে তেহরান জ্বলেপুড়ে যাবে।’
এরআগে শুক্রবার ইরানে হামলার পর ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের সামরিকঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, ইউরেনিয়াম মজুদের প্রধান অবকাঠামোসহ বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে। সেই সঙ্গে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাসহ অন্তত ২০জন কমান্ডারকে হত্যা করেছে। ইরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ৭৮ জন নিহত ও তিন শতাধিক আহত হয়েছে। শুক্রবার ইরানে ইসরাইলের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইরান। দেশটি ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে শনিবার অন্তত ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এতে ইসরায়েলে অন্তত চারজন নিহত এবং ৭০ জন আহত হয়েছে।
অব্যহত হামলার ঘোষণা ইরানের: ইরান ঘোষণা দিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের এ পাল্টা হামলা অব্যাহত থাকবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে তার পাল্টা জবাব শেষ হয়নি। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানি হামলা চলবে। নাম প্রকাশ করেননি, এমন একজন কর্মকর্তার বরাতে ফার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ইরানে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে সবই জানতেন ট্রাম্প! ইরানে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে সবই জানতেন ট্রাম্প! ওই কর্মকর্তা জানান, ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে যে, ভবিষ্যতে ইরান ওই অঞ্চলে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করতে পারে। এদিকে ইসরায়েলও জানিয়েছে, ইরানের বিরুদ্ধে তাদের হামলা চলবে।
গোপনে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র: ইরানে শুক্রবার নজিরবিহীন হামলার আগে ইসরায়েলকে চুপিসারে কয়েক শ অত্যাধুনিক হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিডল ইস্ট আইয়ের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আগে থেকেই বড় পরিসরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুত করছে ইসরায়েল। এরই অংশ হিসেবে ইরানে হামলার কয়েক দিন আগে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইসরায়েলে প্রায় ৩০০টি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায়। অথচ ট্রাম্প প্রশাসন বলছিল, তারা ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী।
এত বিপুলসংখ্যক হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি ইঙ্গিত দেয় যে ইরানে ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন আগে থেকেই ভালোভাবে অবগত ছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই মার্কিন কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এ কথা জানান।
হেলফায়ার হলো লেজারনিয়ন্ত্রিত আকাশ থেকে স্থলে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিস্ফোরণ ঘটাতে এ ক্ষেপণাস্ত্র বিশেষভাবে উপযোগী নয়। তবে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য এটি কার্যকর।
ফ্লাইট বন্ধ: চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব বিমানবন্দরে ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করেছে ইরান। শনিবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানিয়ান এয়ারপোর্টস অ্যান্ড এয়ার নেভিগেশন কোম্পানির জনসংযোগ বিভাগ থেকে এক বিবৃতিতে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইরানের নাগরিকদের দেশটির বিমানবন্দরগুলো এড়িয়ে চলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়। এদিকে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইসরাইলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইরানে হামলার কঠোর সমালোচনা চীনের: ইসরায়েলকে যত শিগগির সম্ভব ইরানে সামরিক হামলা বন্ধ করতে বলল জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন। দেশটির জাতিসংঘ মিশনের সদস্য ও রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেছেন, এই সংঘাতের ফলাফল বা পরিণীতি নিয়ে বেইজিং গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শুক্রবার ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর জরুরি বৈঠক আহ্বান করে নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকে চীনের পক্ষে ফু কং বলেন, ‘ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর হামলা করেছে ইসরায়েল। আমরা এই হামলার সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছি। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যত শিগগির সম্ভব সংঘাত থামান এবং ঝুঁকিপূর্ণ সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ সংঘাতকে আরও বাড়তে দিলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে তা ছড়িয়ে পড়বে এবং এর পরিণতি বা ফলাফল হবে ভয়াবহ।’
ইরানের শীর্ষ ১২ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত: ইসরাইলের বিমান হামলায় ইরানের ১২জন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছে। শনিবার এক বিবৃতিতে ইসরাইলের সেনাবাহিনী দাবি করে, অন্তত ৯ জন শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। এছাড়া এর আগে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে নতুন হামলায় আরও তিন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহতের খবর প্রচার করা হয়েছে। এএফপি ও টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’র শুরুতে ইসরাইলি বিমান বাহিনীর হামলায় ইরানের সরকারি পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে যুক্ত অন্তত ৯ জন জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞকে হত্যা করা হয়েছে। হামলায় নিহত ইরানি বিজ্ঞানীদের নামের তালিকাও প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
বিবৃতিতে ইসরাইলি বাহিনী বলেছে, এই বিজ্ঞানীদের হত্যা ইরানের সরকারের গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির সক্ষমতায় বড় ধরনের আঘাত। ইসরাইলি গোয়েন্দা বিভাগের সংগৃহীত সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইরানে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি নতুন হামলায় ইরানের আরও তিনজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। হামলায় নিহত ইরানি বিজ্ঞানীদের তালিকা প্রকাশ করেছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। প্রাণ হারানো ৯ বিজ্ঞানী হলেন- পারমাণবিক প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ ফেরেইদুন আব্বাসি, পদার্থবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি, রসায়ন প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ আকবর মোতালেবি জাদেহ, ম্যাটেরিয়াল প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ সাঈদ বারজি, পদার্থবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ আমির হাসান ফাখাহি, রিঅ্যাক্টর ফিজিক্স বিশেষজ্ঞ আব্দ আল-হামিদ মিনোশেহর, পদার্থবিজ্ঞানী মানসুর আসগারি, পারমাণবিক প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ আহমদ রেজা জুলফাগারি দারিয়ানি ও যান্ত্রিক প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ আলী বাখৌয়েই কাতিরিমি।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, যেসব বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের হত্যা করা হয়েছে, তারা ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানভাণ্ডার ছিলেন। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে তাদের কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা ছিল। ইরানি এই বিজ্ঞানীদের অনেকেই মোহসেন ফাখরিজাদেহর উত্তরসূরি ছিলেন। ২০২০ সালে ইসরাইলি হামলায় ফাখরিজাদেহ নিহত হন। ‘ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের জনক’ হিসেবে মনে করা হতো মোহসেন ফাখরিজাদেহকে।