জকিগঞ্জের গোটারগ্রাম-কামালপুর সড়ক যেন মরণফাঁদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুন ২০২৫, ৬:১৭:২০ অপরাহ্ন
এখলাছুর রহমান, জকিগঞ্জ:
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হচ্ছে। কোথাও সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্তের।
২০২২ ও ২০২৪ সালে সিলেট অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর বিধ্বস্ত সড়কগুলোর উল্লেখযোগ্য কোনো কাজই হয়নি। সর্বশেষ এ বছরের বন্যায় আরও পাল্টে গেছে অধিকাংশ সড়কের চেহারা। এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনাও ঘটছে এসব সড়কে।
জকিগঞ্জ উপজেলার ৩নং কাজলসার ইউনিয়নের গোটারগ্রাম-কামালপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বিগত বছরের কয়েক দফা বন্যায় ওই সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে বিশাল গর্তের। প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কের সবখানে একই অবস্থা। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। হাজার হাজার নারী-পুরুষ, ছাত্র-শিক্ষক, অসুস্থ বৃদ্ধ ও শিশু প্রতিদিন সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গোটারগ্রাম-কামালপুর সড়কটি ২০২২ ও ২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর এবারের বন্যায় সড়কটি অনেকটা যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ওই সড়ক দিয়ে চৌধুরী বাজার, পশ্চিম গোটারগ্রাম, মঙ্গলসার, কড়ইমুড়া, জামুরাইল, কামালপুর, সোনাপুর, জামালপুর ও ডেমারগ্রামসহ আশপাশের ৮/১০টি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। বিশেষ করে এই সড়ক ছাড়া ৩নং কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যাওয়ার বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় পুরো ইউনিয়নের মানুষ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়।
স্থানীয় জামুরাইল গ্রামের মাওলানা জিহাদ উদ্দিন বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের জন্য আমরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। তবুও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের টনক নড়ছেনা। এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিন পর ওই সড়কটি যান চলাচলের পুরোপুরি অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
টমটম চালক রাসেল আহমদ জানান, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যেতে গেলে গাড়ির অনেক ক্ষতি হয়। কয়েক দিন আগে তার গাড়ি গর্তে পড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বুদুর জানান, এটা সড়ক না। দেখলে মনে হয় একটি ভাঙাচোরা কাচা রাস্তা। গাড়ি যেভাবে হেলে-দুলে চলে তাতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনার খবর আসে। অনেকবার দাবী জানানো হয়েছে, সড়ক সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। কিন্তু উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগই নেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩নং কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, গোটারগ্রাম-কামালপুর রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এ বিষয়ে আমি একাধিকবার উপজেলা এলজিইডি অফিসকে অবগত করেছি। তবুও রাস্তাটি সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (অ.দা.) এস এম মজিবর রহমান জানান, আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সব ক’টি রাস্তার তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়েছি। মেরামত কাজের অনুমোদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।