সম্পাদকীয় : আল কোরআনের অলৌকিকত্ব ও শিশু হাফেজ
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুন ২০২৫, ৭:২২:১৩ অপরাহ্ন
সম্প্রতি ‘৭ বছর বয়সী শিশু ৯ মাসে কোরআনে হাফেজ’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে একটি জাতীয় মিডিয়ায়। এতে বলা হয়েছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় ৭ বছর বয়সী শিশু মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ ৯ মাসে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। মুহাম্মদ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হেফজ অর্থাৎ পবিত্র কোরআন মুখস্থ করার অনুশীলন শুরু করে। ২০২৫ সালের মে মাসে হেফজ সম্পন্ন হয়। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস মোড় এলাকার মুফতি আবদুল্লাহ বিন আমজাদের ছেলে মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহর মা, নানা ও নানী কোরআনের হাফেজ। এছাড়াও তাদের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে প্রায় ১২ জন কোরআনে হাফেজ। মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহের মা হাফেজা মাসুমা জান্নাত বলেন, আমার ছেলে মুহাম্মদের বয়স যখন আড়াই মাস, তখন সে আল্লাহ আল্লাহ বলা শিখে। তখন থেকে আমাদের আগ্রহ ছিলো, তাকে হেফজ পড়াবো, কোরআনে হাফেজ বানাবো।
লক্ষণীয় যে, কোন ধর্মীয় বিশ^াস ও আবেগ অনুভূতির কথা বাদ দিলেও একটি ৭ বছরের প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর পক্ষে কোরআনের মতো একটি বিশাল গ্রন্থ মাত্র ৯ মাসে মুখস্থ করা নিঃসন্দেহে একটি বিস্ময়কর ও অসাধারণ বিষয়। পবিত্র কোরআনে ৬ হাজারেরও বেশী আয়াত বা বাক্য রয়েছে। আরবীর মতো একটি বিদেশী ভাষায় গ্রন্থ বা কিতাবটি। শুধু মুসলিম নয় যে কোন সচেতন মানুষের কাছে মুহাম্মদের এই কাজটি অনন্য ও অসাধারণ। পবিত্র কোরআন ছাড়া বিশে^র এতো বিশাল ভিন্ন ভাষার কোন গ্রন্থ ৭ বছরের শিশু দূরে থাক কোন বয়স্ক ব্যক্তির পক্ষেও মুখস্থ করার কোন নজির কম। এখানেই পবিত্র কোরআনের মাজেজা বা অলৌকিতত্ব নিহিত। শুধু মুহাম্মদ নয়, আরো বহু শিশু কিশোর এর আগে এই পবিত্র গ্রন্থ হেফজ বা মুখস্থ করার নজির রয়েছে। এটা থেকে প্রমাণিত হয়, শুধু শিশু প্রতিভার কারণেই এমন মুখস্থ সম্ভব হয় না, বরং এই মহাগ্রন্থের মধ্যে অলৌকিতত্ব লুকিয়ে আছে। এটা এমনভাবে সৃষ্টি যে একটি শিশুও অনায়াসে এতো বড়ো গ্রন্থ মাত্র কয়েক মাসে বা বছরে অনায়াসে মুখস্থ করে ফেলতে পারে।
শুধু মুখস্থ নয়, এই মহাগ্রন্থ এতোই মধুর ও সুরেলা যে অধিকাংশ পাঠক শ্রোতাকে মুহূর্তেই মুগ্ধ ও অভিভূত ক্ষমতা রাখে। তাই বিশ^ব্যাপী কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা হয়। বাংলাদেশের অনেক হাফিজ ও ক্বারী এ ধরনের প্রতিযোগিতায় ইতোমধ্যে কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন, আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। বলা বাহুল্য, পবিত্র কোরআন গোটা মানব জাতির হেদায়া বা সঠিক পথ প্রদর্শনকারী। তাই কোরআন মুখস্থকরণ ও তেলাওয়াতের পাশাপাশি এতে প্রদত্ত বিধি বিধান ও নির্দেশনাবলী সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করা অবশ্য কর্তব্য। আল্লাহপাক সকল বিশ^াসীদের পবিত্র কোরআনের আদেশ নির্দেশ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন এবং তা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে কাজে লাগানো তথা বাস্তবায়নের তওফিক দান করুন, এই প্রার্থনা আমাদের।