ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকার হামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুন ২০২৫, ১০:৫০:০৩ অপরাহ্ন
আমেরিকাকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে, হুশিয়ারি ইরানের
জালালাবাদ রিপোর্ট : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে টানা ১৮ ঘণ্টা উড়ে গিয়ে ইরানের ফরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বি-২ বোমারু বিমান। শনিবার (২১ জুন) রাতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করে আমেরিকার এই বোমারু বিমানগুলো। মার্কিন বিমানবাহিনী এই প্রথম কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার বিধ্বংসী বোমা জিবিইউ-৫৭ ব্যবহার করল। এই হামলার মধ্য দিয়ে ইরান যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানে মার্কিন হামলা এই অঞ্চলে দীর্ঘ মেয়াদে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে। এই যুদ্ধ এখনই বন্ধ না হলে বিশ^জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে, কারণ ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিলে বিশ^ব্যাপী তেলের দাম বেড়ে যাবে। এতে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এদিকে মার্কিন হামলার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত এখনো স্পষ্ট না হলেও পরমাণু স্থাপনায় হামলার কারণে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা। এ হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের ‘বর্বরোচিত লঙ্ঘ’ হিসেবে উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, পারমাণবিক স্থাপনায় অবৈধ মার্কিন হামলার পর, মাঠের ও বিকিরণের তথ্যে দেখা যাচ্ছে কোনো দূষণের তথ্য রেকর্ড করা হয়নি। এই স্থাপনাগুলোর আশেপাশের বাসিন্দাদের কোনো বিপদ নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে।
তবে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা ধ্বংস করা। ইরান যে পারমাণবিক হুমকি তৈরি করেছে, তা বন্ধ করা। তিনি বলেন, ইরান কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় না ফিরলে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রাম্প বলেন, আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি, যার মধ্যে রয়েছে ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান। সব উড়োজাহাজ এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে। তিনি বলেন, প্রধান লক্ষ্যবস্তু ফর্দোয় সর্বোচ্চ পরিমাণ বোমাই ফেলা হয়েছে। সব উড়োজাহাজ নিরাপদে ফিরছে। মহান মার্কিন যোদ্ধাদের অভিনন্দন। বিশ্বের আর কোনো সামরিক বাহিনী এটি করতে সক্ষম হতো না। এখন শান্তির সময়। হোয়াইট হাউস গত বৃহস্পতিবার রাতে বলেছিল, ট্রাম্প দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরানে হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ কথা বলার দুই দিন পরই ইরানে হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার (২২ জুন) জনগণের উদ্দেশে ইংরেজিতে ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ^ শান্তির আলোকবর্তিকা। এ অঞ্চলের শান্তি রক্ষায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় বোমা হামলা চালিয়েছে। এখন শান্তির সময় এসেছে।
ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তেহরান। ইরান বলেছে, যে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কথা যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সেগুলো আগেই খালি করে ফেলা হয়েছিল। তাই সেখানে এমন কিছু ছিল না, যা বিকিরণ সৃষ্টি করে নাগরিকদের ক্ষতির কারণ হতে পারত। তবে এখন পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে কোনো পাল্টা হামলার কোনো ঘোষণা পাওয়া না গেলেও কড়া বিৃবতি দিয়েছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)। আইআরসি বলেছে, আমেরিকার আগ্রাসনের ফলে আত্মরক্ষার বৈধ অধিকারের কাঠামোর মধ্যে থেকেই আমরা বিকল্প এমন পদেক্ষপ নিয়েছি, যা তাদের কল্পনারও বাইরে এবং ইরানে আগ্রাসীরা অবশ্যই দুঃখজনক ও অনুশোচনামূলক চরম পরিণতি ভোগ করবে। সংস্থাটি আরও বলেছে, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের দেশীয় ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি কোনও আক্রমণের মাধ্যমে ধ্বংস করা যাবে নাম, বরং, এই আক্রমণ ইরানের তরুণ ও দৃঢ়চেতা বিজ্ঞানীদের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ইচ্ছাকে আরো শক্তিশালী করবে।
হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্ত : ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য মেজর জেনারেল কাউসারি জানিয়েছেন, মজলিসে শুরা-ই ইসলামি (পার্লামেন্ট) হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল (সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ)। ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রেক্ষিতে এ ঘোষণা দিল দেশটি। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে মধ্যপ্রাচ্যের তেল রপ্তানিতে বড় সংকট তৈরি হবে। এতে বিশে^ তেলের দাম বেড়ে যতেে পারে।
জরুরি বৈঠক ডেকেছে আইএইএ : ইরানে মার্কিন হামলার পর সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ। ইরানে সৃষ্ট জরুরি পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে আইএইএ নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালেও আশপাশের এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বৃদ্ধির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে ইরানের পারমাণবিক সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলাম আইএইএ-কে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, তেহরান চায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিষয়ে তদন্ত হোক এবং একই সাথে তারা আইএইএ-র কাছে যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার নিন্দা জানানোরও দাবি জানানো হয়।
অভিযানের নাম ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ : যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন জানিয়েছেন, ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে পরিচালিত অভিযানে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এ হামলার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বি-২ বোমারু বিমান স্থানীয় সময় শুক্রবার উড্ডয়ন করে। ১৮ ঘণ্টার ফ্লাইট শেষে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে হামলা চালায় বিশেষ এই বিমান। মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান কেইন। কেইন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর একাধিক শাখা পরিকল্পিতভাবে ও সমন্বিতভাবে এই অভিযান পরিচালনা করে। ইরানে হামলা চালানোর সময় দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিরোধ আসেনি বলে উল্লেখ করেন জেনারেল কেইন। তিনি বলেন, ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী থেকে ‘কোনো গুলি ছোড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।’ এই মার্কিন জেনারেল আরও বলেন বলেন, ‘ইরানের যুদ্ধবিমান আকাশে ওড়েনি, মনে হচ্ছে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমাদের শনাক্তই করতে পারেনি।’
ইসরাইলে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইরান : ইসরাইলে এখন পর্যন্ত যত হামলা হয়েছে এর মধ্যে রোববারের ক্ষেপণাস্ত্র ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। যার ওজন এক হাজার ৫০০ ওয়্যারহেড। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে খোররামশাহর-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের পূর্ববর্তী পরীক্ষামূলক ফুটেজ সম্প্রচার করা হয়েছে। যার অনস্ক্রিন ক্যাপশনে বলা হয়েছে, ‘এটি আজ ইসরাইলের ওপর হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে।’ ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহরের মধ্যে খোররামশাহর-৪ এর পেলোড সবচেয়ে ভারী। ইরান বলছে ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা দুই হাজার কিলোমিটার (১,২৪০ মাইল) এবং এর ওয়ারহেড এক হাজার ৫০০ কিলোগ্রাম (৩,৩০০ পাউন্ড)।
ইরানের মিসাইল বৃষ্টিতে ইসরাইলে বন্ধ বিমান চলাচল : রোববার (২২ জুন) ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস বিবৃতিতে জানায়, ইসরাইলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, গবেষণা কেন্দ্র এবং সহায়তা ঘাঁটি, বিভিন্ন স্তরের নিয়ন্ত্রণ ও কমান্ড সেন্টার লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। টাইমস অব ইসরাইল জানায়, হামলায় দূরপাল্লার তরল এবং কঠিন জ্বালানি উভয় ধরণের ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার করা হয়। এদিকে বিমানবন্দর ছাড়াও ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ৮৬ জনের বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইসরাইলের জরুরি সেবা সংস্থা জানায়, অন্তত ১০টি স্থানে হামলা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে কারমেল, হাইফা, তেলআবিব আবিব এবং উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকা। ইসরাইলের সেনাবিাহিনী জানায়, দুই দফায় সব মিলিয়ে ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। প্রথম দফায় ২২টি আর দ্বিতীয় দফায় পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে বলে মনে করে রাশিয়া : রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ মনে করেন, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যেও ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। কোনো পরিস্থিতিতেই সেটা বন্ধ করবে না। তেহরান তার অস্তিত্ব রক্ষার পথ খুঁজে পেয়েছে এই পারমাণবিক কর্মসূচির মধ্যেই এবং তারা যেভাবেই হোক, এটি চালিয়ে যাবে। মেদভেদেভ জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল একটি গোপন পারমাণবিক কর্মসূচি রয়েছে এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থাএর তত্ত্বাবধানে এমন কর্মসূচিগুলো ত্যাগ করার আহ্বান জানান।
রাশিয়ায় জরুরি সফরে ইরানের পরাষ্ট্রমন্ত্রী : এদিকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে রাশিয়া যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। আগামীকাল সোমবার (২৩ জুন) তিনি রুশ প্রেসিডেন্টেটর সঙ্গে ‘গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে’ বসবেন।
বিশ্বনেতা ও কূটনীতিকদের নিন্দা : ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনায় বিশ্বনেতা ও কূটনীতিকরা নিন্দা জানিয়ে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ : ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি একে ‘উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি’ হিসেবেও অভিহিত করেন। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে আরও ভয়াবহ সংকট তৈরি করতে পারে বলেও সতর্ক করেন এবং অবিলম্বে পরিস্থিতি শান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে গুতেরেস আরও বলেন, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এটি ইতোমধ্যে অস্থিতিশীল অঞ্চলটিতে ভয়ানক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি, তবে কোনো সামরিক সমাধান নেই। তিনি বলেন, সমাধানের একমাত্র পথ কূটনীতি, একমাত্র আশা হলো শান্তি।
এদিকে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া: নিউজিল্যান্ড, মেক্সিকো, চিলি, ভেনেজুয়েলা, সৌদি আরব, ওমান, কাতার, ইরাক, রাশিয়া, স্পেন, ব্রাজিল ও ভারতসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান ইরানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এ অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনতে সব পক্ষকে এক হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।