পরিবেশ সুরক্ষায় প্লাস্টিক বর্জনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন ২০২৫, ৮:৫৯:২১ অপরাহ্ন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দূষণ রোধ ও পরিবেশ সুরক্ষায় প্লাস্টিক বর্জনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, প্লাস্টিক পরিবেশের বিষ। এটা কেবল মানুষ নয়, পৃথিবীর সকল প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। পৃথিবীতে প্রতিদিন মানুষ বাড়ছে বাংলাদেশেও বাড়ছে, এর সঙ্গে বাড়ছে জনপ্রতি প্লাস্টিকের ব্যবহার। আসুন আমরা এ বিষয়ে সচেতন হই এবং আজ থেকে মনে মনে ঠিক করি প্লাস্টিক বর্জন করব।
গতকাল বুধবার ৯২৫ জুন) রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৫ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
পরিবেশ সুরক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জীবন বাঁচাতে হলে পরিবেশ বাঁচাতে হবে। পরিবেশ ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করতে পারলে আমরা সুন্দর পৃথিবী উপভোগ করতে পারব। তিনি বলেন, আজকের পৃথিবী নানা রকমের সংকটের মুখে রয়েছে যেমন-যুদ্ধ বিগ্রহ, প্রযুক্তির প্রসার ও অপব্যবহার আমাদের সামনে নানা চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ এখনও অনেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারছি না, তা হলো- প্রকৃতির বিধ্বংসী রূপ। এটা প্রকৃতির দোষ না, আমাদের দোষ। আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কথা, সেটা না করে উল্টো দিকে চলছি। মানুষ প্রকৃতিকে ধ্বংস করছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গোড়াতে যদি উৎপাদন বন্ধ করতে পারি, তাহলে পলিথিন বর্জনের বিষয়টা আর থাকে না। পলিথিন ছাড়া পৃথিবী অচল নয়। এসময় প্রধান উপদেষ্টা সরকারি অফিসগুলোতে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেন।
দেশের প্রত্যেক নাগরিক যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে সপ্তাহে অন্তত একটা দিন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জন করে, তাহলে ক্রমান্বয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এর জন্য দৃঢ় সিদ্ধান্ত লাগবে। সিদ্ধান্ত ছাড়া কঠিন এ পথ আগানো যাবে না।
অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, প্লাস্টিক এমন এক জিনিস যার জন্ম আছে, মৃত্যু নেই। পৃথিবীর সকল কিছুর মৃত্যু আছে, এর মৃত্যু নেই। প্লাস্টিক আমাদেরকে ধ্বংস করে দেবে। আমরা যদি দৈনন্দিন জীবনযাপন বদলাতে না পারি, তাহলে প্লাস্টিক দূষণের এই যুদ্ধে আমাদের পরাজয় অবধারিত।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এদেশের তরুণ প্রজন্মের অসীম সাহসিকতা জুলাই অভ্যুত্থানে আমরা দেখেছি। নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তারা দেখিয়েছে। এই প্রজন্ম ইতিহাসের সবচেয়ে সৃজনশীল ও শক্তিশালী প্রজন্ম। তিনি জলবায়ু সংকট ও দূষণ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানস্থলে একটি সোনালু গাছ লাগিয়ে বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বক্তব্য রাখেন।