কোয়ারি খোলার দাবী : পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত, চলবে লোড-আনলোড কর্মবিরতি
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জুন ২০২৫, ৯:১৪:৩১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বালু-পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ২৮ ও ২৯ জুন (শনি ও রোববার) টানা দুই দিন (৪৮ ঘণ্টা) সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটের লোড-আনলোড পয়েন্টে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩০ জুন) সকাল থেকে সিলেট জেলায় ৪৮ ঘন্টার পণ্যপরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির ডাকও দিয়েছিলো বালু-পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। কিন্তু জনদুর্ভোগ বিবেচনায় এ কর্মসূচি থেকে সরে এসে সোমবার সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সিলেটের সদর উপজেলার ধোপাগুল শহীদ মিনারে গণঅনশন ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। পাশাপাশি কোয়ারি এলাকা লোড আনলোড পয়েন্টে শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলবে ৫ জুলাই শনিবার পর্যন্ত।
এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা সিলেট জেলা প্রশাসনের সাথে বেঠক করতে চাচ্ছেন। সেই বৈঠকের ফলাফলের উপর ভবিষ্যত কর্মসূচী নিভর করবে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা পাথর মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল জলিল।
তিনি জানান, জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় আমরা পরিবহন কর্মবিরতি স্থগিত করেছি। লোড-আনলোড কর্মবিরতি ৫ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বিভিন্ন পয়েন্টে অনশন ও অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, ১৪ জুন প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ১৬ জুন থেকে পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। এই অভিযান সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কোনো না কোনো স্থানে নিয়মিত চলছে।
এদিকে সোমবার কোম্পানীগঞ্জে ১৭ স্টোন ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে র জেলা প্রশাসনের টাস্কফোস। এর আগে রোববারও (২৯ জুন) গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে ৩য় দফায় ফের অভিযান চালিয়ে আরো ১৮টি স্টোন ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে টাস্কফোর্স। এর আগে ২৫ ও ১৮ জুন জাফলংয়ে ১৪৪টি যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।
এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনের বিকল্প দেখছেন না পাথর কোয়ারি সংশ্লিষ্ট মালিক শ্রমিকগণ। ফলে বাধ্য হয়ে টানা কর্মসূচী চালিয়ে নিতে চাচ্ছেন তারা।