এনবিআরের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুলাই ২০২৫, ৮:২৪:৩৩ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সদস্যের বিরুদ্ধে কর আদায়ে ঘুষ গ্রহণ, কর ফাঁকির সুযোগ দেওয়া এবং হয়রানির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য লুৎফুল আজীম, ভ্যাটের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) অতিরিক্ত কমিশনার আবদুর রশীদ মিয়া, কর গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, কর অঞ্চল-১৬এর উপকর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম ও এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান।
দুদক জানায়, এই কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কর ও শুল্ক ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও জানায়, তথ্য-উপাত্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে কিছু করদাতাকে কর ফাঁকির সুযোগ করে দিচ্ছেন। আবার নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে ইচ্ছাকৃতভাবে কর কমিয়ে দেন, যাতে করদাতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উভয়ে লাভবান হন। এর ফলে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, কিছু কর্মকর্তা ঘুষ না পেলে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা দিয়ে করদাতা ও প্রতিষ্ঠানের মালিকদের হয়রানি করেন। কর ফেরতের ক্ষেত্রেও অনিয়ম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। করদাতারা আগাম কর দেওয়ার পর কিংবা বেশি কর পরিশোধের পর নিয়ম অনুযায়ী তা ফেরত পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা ফেরত পেতে গেলে অনেক সময় অতিরিক্ত করের অর্ধেক পরিমাণ ঘুষ দিতে হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই এসব টাকা নিজেদের পকেটে ভরছেন বলে জানা গেছে।
দুদকের সূত্র আরও জানায়, এনবিআরের কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর আদায়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
এর আগে রোববার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান, কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে কর ফাঁকিসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারেক রিকাবদার এবং এনবিআর সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলমসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
তিনি বলেন, কারো হাতিয়ার হয়ে দুদক কাজ করে না। যাচাই-বাছাই করেই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে- এনবিআর সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম; অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮ মির্জা আশিক রানা; বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান; যুগ্ম কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা; ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারেক রিকাবদার এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু।