আতঙ্কের আরেক নাম ক্বীনব্রিজ
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুলাই ২০২৫, ১০:৪২:৫২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ঐতিহ্যের বাহক সিলেটের ক্বীনব্রিজ এখন লোকজনের কাছে আতঙ্কের আরেক নাম হয়ে দেখা দিয়েছে। দিনে প্রচন্ড জটলা আর রাতে অন্ধকার থাকায় প্রায়ই এই পথে লোকজন পকেটমার ও ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন। বিকেলের দিকে তীব্র জটলায় ঘটে পকেটমারের ঘটনা আর রাত ৮টার পর ছিনতাই।
ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ক্বীনব্রিজে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কেবল পায়ে হেঁটে এবং মোটরসাইকেলে এই ব্রিজ দিয়ে সুরমা নদী পারাপার হওয়া যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে যানবাহন বন্ধ থাকায় ব্রিজের দুইদিকেই অর্ধেকের বেশি হকারদের দখলে চলে গেছে। সবচেয়ে বেশি হকার বসেন পূর্বদিকে। পশ্চিমদিকে দক্ষিণ পাশের মুখ বাইক রাইডারদের এবং উত্তরদিকে হকারদের দখলে। এতে উভয় তীরে প্রবেশমুখ প্রায় অবরুদ্ধ। ফলে বিব্রতর অবস্থায় পড়তে হয় পথচারীদের। ঠেলাধাক্কা করে ব্রিজে উঠে পড়তে হয় চাপাচাতিতে। হকার আর ক্রেতা মিলে পুরো ব্রিজ এক গ্রামীণ বাজারে পরিণত হয়েছে।
হকার আর ক্রেতার চাপে একেবারে সরু হয়ে গেছে চলাচলের পথ। মোটরসাইকেল নিয়ে চালকরা এলে সাইডে ভীড়ের মধ্যে সরে পথ করে দিতে হয়। আর এই ফাঁকে ক্রেতার সাথে মিশে থাকা পকেটমারের হাতে টাকা মানিব্যাগ হারান পথচারী। সবচেয়ে বেশি জটলা তৈরি হয় বিকেল থেকে সন্ধ্যার আগে। প্রায়ই বিকেলের দিকে মানিব্যাগ হারানো লোকজনের হৈ হুল্লা শোনা যায়।
সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ব্রিজে লাইট না থাকায় ধীরে ধীরে অন্ধকার নেমে আসে। রাত ৮টার পর এই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে গা শিউরে ওঠে পথচারীদের। অনেকেই পরিচিতজনদের রাতে ব্রিজ এড়িয়ে চলতে নিষেধ করেন। অন্ধকার আর নিরিবিলিতে প্রায়ই ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনা।
দক্ষিণ সুরমার কদমতলীর বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার মুন্না জানান রাত আটটার পর এই পথে যেতে গা ছমছম করে। তাই তারা রাতে এই ব্রিজ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন প্রায়ই এই ব্রিজে রাতে ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া যায়। তাই পরিচিতজনদের রাত আটটার পর এই ব্রিজ ব্যবহার না করতে উৎসাহিত করেন তারা।
স্থানীয়দের দাবি ঐতিহ্যের বাহক এই ব্রিজে পর্যাপ্ত লাইটিং ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। এছাড়া হকার উচ্ছেদ করে ফুলগাছ দিয়ে দুইদিক সাজিয়ে নান্দনিক রূপ দেওয়ার দাবিও তাদের। পাশাপাশি তারা বলেন ব্রিজের দক্ষিণ পাশে একেবারে নিকটে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ও প্রধান বাস টার্মিনাল। সারাদেশ থেকে যাত্রী ও পর্যটকরা এখানে এসে নামেন। তাই ট্রেনের সময় এবং রাতে ও ভোরে যাত্রীচলাচল নিরাপদ করার স্বার্থে পুলিশ প্রহরা বাড়ানো দরকার। ছিনতাই ও পকেমারের মধ্যে বেশিরভাগ শিকার হন সিলেটের বাইরে থেকে আসা লোকজন। যারা এই বিষয়ে সতর্ক নন। তাই এসব ঘটনায় দেশের অন্যান্য স্থানে সিলেটের মান মর্যাদা নিয়েও প্রশ্ন উঠে, যা সিলেট পর্যটনসহ সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।