ভোটকেন্দ্র নীতিমালার গেজেট : ডিসি-এসপির কমিটি ও ইভিএম বাদ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১১:৪১:৩১ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট :
এবার স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকেও বাদ গেল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। এ থেকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরে আসায় এখন আর ইভিএম ভোটের জন্য কোনো কেন্দ্র থাকবে না। সব কেন্দ্রে ভাট নেওয়া হবে ব্যালট পেপারে।
‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫’ জারি করে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ইসি।
একইসাথে ভোটকেন্দ্র স্থাপনে ডিসি-এসপির কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এটি ইসির ওয়েবসাইটে নিশ্চিত করা হয়। এর আগে গত ২৬ জুন গেজেট করা হয় নীতিমালার।
সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয় এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নতুন ইসি।
২০২৩ সালের করা নীতিমালায় ইভিএমে ভোটদানের জন্য পৃথক ভোটকক্ষ স্থাপনের বিধান ছিল। এবারের নীতিমালায় এটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ইভিএমের জন্য কোনো ভোটকেন্দ্র থাকছে না।
সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপনেও জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) কর্তৃত্ব কমিয়ে নিজস্ব কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দিয়েছে কমিশন। ডিসি ও ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি তুলে দেওয়া হয়েছে এবারের ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা থেকে। এক্ষেত্রে নিজস্ব কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দিয়েছে কমিশন।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে দেড় লাখ ইভিএম কেনে ইসি। এরই মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো মেশিন ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। সেগুলো মেরামতের জন্য অর্থ না পাওয়ায় ইভিএম প্রকল্পটি বাতিল করে দেয় ইসি।
ইভিএম কেনাসংক্রান্ত অনিয়ম নিয়ে ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান চালায়। এ প্রক্রিয়ার মধ্যেই সম্প্রতি সংসদ নির্বাচনের আইনি কাঠামো থেকে ইভিএমকে বাদ দেয় ইসি। এবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ইভিএম বাদ দিল সাংবিধানিক সংস্থাটি।
গত ২১ মে এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসির পঞ্চম কমিশন ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ অনুমোদন করা হয়। সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় যে কমিটি ছিল আমরা তা বিলুপ্ত করেছি। এটা কমিশনের অধীনে আনা হয়েছে। যেহেতু ইভিএমে ভোটের ব্যবস্থা নেই, তাই ইভিএম সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আমরা বাতিল করেছি।
নীতিমালা অনুযায়ী, বরাবরের মতো গড়ে ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোট কেন্দ্র, গড়ে ৫০০ জন পুরুষ ও ৪০০ জন নারী ভোটারের জন্য একটি ভোট কক্ষ নির্ধারণ করা হবে।
সবশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৪২ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র ছিল। ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি।
এবার সাড়ে ১২ কোটি ভোটারের জন্য আরও বেশি ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ দরকার হবে। ভোটকেন্দ্র নিয়ে দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ভোটের অন্তত ২৫ দিন সব ভোটকেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।