কাল পবিত্র আশুরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুলাই ২০২৫, ৪:১২:২৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : আগামীকাল ১০ মহররম রোববার পবিত্র আশুরা। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূণ পরিবেশে নানা-কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সারাদেশে পবিত্র আশুরা পালন করা হবে।
কারবালার ‘শোকাবহ এবং হৃদয় বিদারক ঘটনাবহুল’ এই দিনটি বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে মুসলিম বিশ্বে এ দিনটি গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়।
সৃষ্টির শুরু হতে আশুরা (১০ মহররম) একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিনে পৃথিবীর বহু উল্লেখযোগ্য ঘটনা সংঘটিত হয়। এর কয়েকটি হলো,
১. আশুরার দিনে আসমান, যমিন, লওহ ও কলম সৃষ্টি হয়।
২. এদিনে হযরত আদম (আঃ) পৃথিবীতে অবতরণ করেন।
৩. এদিনে হযরত নূহ (আঃ) মহা প্লাবনের পর নৌকা থেকে পৃথিবীতে অবতরণ করেন।
৪. এদিনে হযরত ইবরাহীম (আঃ)’খলিলুল্লাহ’বা আল্লাহর বন্ধু উপাধি লাভ করেন।
৫. এদিনে হযরত ইবরাহীম (আঃ) নমরূদের অগ্নিকুণ্ড হতে মহান আল্লাহর অসীম কুদরতে পরিত্রাণ পান।
৬. এদিনে সূদীর্ঘ ৪০ বছর পরে হযরত ইয়াকুব (আঃ) এবং হযরত ইউসুফ (আঃ) এর পুনর্মিলন হয়।
৭. এদিনে হযরত ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে মুক্তি লাভ করেন।
৮. এদিনে হযরত মুসা (আঃ) বনী ইসরাঈলদের সাথে নিয়ে নীল নদ পার হন।
৯. এদিনে ফেরআউন- তার সঙ্গী ও সৈন্য সামন্তসহ নীল নদে ডুবে মারা যান।
১০. এদিনে হযরত ঈসা (আঃ) আল্লাহর অসীম কুদরতে পিতা ছাড়া পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেন।
১১. এদিনে হযরত ঈসা (আঃ) মহান আল্লাহর আদেশে আসমানে আরোহন করেন। তিনি এখন্ও আসমানে জীবিত আছেন এবং শেষ নবীর উম্মত হিসেবে পৃথিবীতে আবার আসবেন।
১২. আশুরার দিনেই ৬১ হিজরিতে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) ও তার অনুসারীরা কারবালার ময়দানে ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে শাহাদাত বরণ করেন। এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে ।
কেয়ামত আশুরার দিন ঘটবে বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
এই ঘটনাগুলো পবিত্র আশুরার দিনকে মুসলমানদের নিকট অত্যন্ত গুরুত্ববহ এবং তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাস মুহাররমের রোজা (মুসলিম)। নবী (সাঃ) মহররমের ৯ ও ১০ তারিখ রোজা রাখার জন্য উৎসাহিত করেছেন।
মুহাররম মাসের নয় ও দশ তারিখে রোজা রাখাই হচ্ছে এই মাসের করণীয় সুন্নতী আমল। আজকে সত্য ও পরিষ্কার ইতিহাস বিকৃত করে একশ্রেণীর লেখক আশুরার দিনে কারবালার ইতিহাস সংযুক্ত করে বলার চেষ্টা করছে যে, ঐতিহাসিক কারবালার দিনে ইমাম হুসাইন (রা.) নির্মমভাবে শাহাদাতবরণ করেন তাই এই দিনে রোজা রাখা হয়। প্রকৃত বিষয় তা নয়। কারণ কারবালার যুদ্ধ হয়েছিল হিজরি ৬০ সালে। আর আশুরার রোজা ইসলামে প্রবর্তন হয় রাসূল (সা.) মক্কা হতে মদিনায় হিজরত করার পর দ্বিতীয় হিজরিতে। তাছাড়া পূর্ববর্তী নবী ও তাদের অনুসারীরা তা পালন করতেন।