বাইরের শক্তির ইন্ধনে পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা: প্রমাণ পেয়েছে সেনাবাহিনী
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭:৩৫:৪৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: খাগড়াছড়ির সংঘর্ষকে পরিকল্পিত দাবি করে, এটিকে ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিকল্পনার অংশ মনে করছে সেনাবাহিনী। দেশের বাইরের একটি শক্তির ইন্ধনে, এখানকার একটি আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও প্রমাণ পেয়েছে সেনাবাহিনী। সমানের দিনগুলোতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এদিকে, দুর্গাপূজা উৎসব ও অবরোধ শিথীল করায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে খাগড়াছড়িতে, খুলেছে কিছু কিছু দোকানপাট। আতঙ্ক থাকলেও কাজের তাগিদে ঘর ছেড়ে বাইরে আসছেন মানুষ।
খাগড়াছড়িতে মোড়ে মোড়ে কড়া পাহারায় সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সড়কে টহল, চেকপোস্টে তল্লাশির পাশাপাশি, ঝুঁকিপূর্ণ পাড়াগুলো ঘিরে সতর্ক অবস্থায় সবাই।
অবরোধ পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল করায় গত দুই দিনের চেয়ে পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হয়েছে। খুলছে কিছু দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আতঙ্ক কাটিয়ে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছেন স্থানীয়রা।
তাছাড়া দুর্গাপূজার উৎসবও চলছে সনাতনী পাড়ায়। তবে পাড়াগুলোতে এখনও স্বস্তি ফেরেনি। বিশেষ করে গুইমারায় সে পাড়াটিতে এখনও ঘরে ফেরেনি অনেকে। সেখানে আজ (মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর) ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।
সকালে সেনাবাহিনী জানায়, পার্বত্য এলাকা নিয়ে একটি গোষ্ঠী গভীর ষড়যন্ত্র করছে, যার পেছনে বহিঃশক্তিরও ইন্ধন আছে। সামনে দেশে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সংঘর্ষ ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিকল্পনার অংশ বলেও দাবি তাদের।
সেনাবাহিনীর দাবি, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করেছে একটি পক্ষ। সেনাবাহিনী প্রয়োজনে আরও কঠোর অবস্থানে যাবে।
খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘বহিঃশক্তি অথবা এখানকারই একটি মহল তাদের পেছন থেকে সহযোগিতা করছে। সর্বোপরি ইপিডিএফ সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, একমাত্র তারাই এখানে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। আমরা এই ইপিডিএফ এবং তারুণ্যের সংগঠনগুলোকে সব সময় আহ্বান জানাই যে, পরিস্থিতি শান্ত রাখুন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় এ অঞ্চলকে স্থিতিশীল রাখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
খাগড়াছড়ি সদরের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সজাগ আছি এবং তাদের আমরা যেমন নস্যাৎ করেছি, ভবিষ্যতে খাগড়াছড়ি সদরে যদি কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়, সেনাবাহিনী কঠোর হস্তে তা দমন করার জন্য প্রস্তুত।’
অবরোধ শিথিল হলেও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলা ও ঢাকা, চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ এখনও বন্ধ। আটকে আছে যাত্রী ও পণ্যবাহী শত শত যানবাহন। এখনও পযর্ন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় জেলার নিদির্ষ্ট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রাখা প্রয়োজন বলছে প্রশাসন।
তদন্ত কমিটি গঠন: এদিকে খাগড়াছড়ির গুইমারায় সহিংসতার ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে গুইমারায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে এ কথা জানান জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।
তিনি বলেন, যারা নিহত ও আহত হয়েছেন আমরা তাদের পাশে থাকব। তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। তাদের পুনবার্সনের উদ্যোগ নেয়া হবে। যারা চিকিৎসাধীন রয়েছে আমরা তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিব। আজকে আমরা এখানে এসেছি যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সমবেদনা জানানোর জন্য।
ডিসি আরও বলেন, অবরোধকারীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাদের যে ৮ দফা রয়েছে তার মধ্যে আমরা ৭টা এড্রেস করেছি। আমরা চাই আলোচনার টেবিলে বিষয়টির সমাধান হোক। তারা যে অবরোধ দিয়েছে সেটা প্রত্যাহার করলে আমরা ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করব। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসক। ক্ষতিগ্রস্তরা বিভিন্ন অভিযোগ প্রশাসনের কাছে তুলে ধরেন।