আজ বিজয়া দশমী : শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৫:২৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: শারদীয় দুর্গাপূজার আজ বিজয়া দশমী। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন বাঙালি ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী এই শারদ উৎসবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও একটি বছর। আজ সকালে হবে দশমীর বিহিত পূজা। পূজা শেষে দর্পণ ও বিসর্জন।
গতকাল বুধবার মহানবমীতে মন্দির, ম-পে যেন মিলেমিশে গেছে আনন্দ-বেদনা। দেবীর বন্দনায় ছিল ভিন্ন এক আবহ। পূজার উদ্যাপন আর দেবীকে বিদায়ের সুর বেজেছে ভক্তের হৃদয়ে। সকালে কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হয় নবমীর আনুষ্ঠানিকতা। পূজা শেষে ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি নিবেদন করেন।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে হয় এবারের শারদীয় দুর্গাপূজার মূল কার্যক্রম। আগেরদিন শনিবার দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। বোধন শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এ বোধন করার বিধান রয়েছে। বিভিন্ন পুরাণ অনুসারে ভগবান রামচন্দ্র শরৎকালে রাক্ষসরাজ রাবণকে বধের উদ্দেশ্যে দুর্গাপূজা করেন। তিনি অকালে এ বোধন করেন বলেই এটি অকালবোধন নামে খ্যাত। তবে বসন্তকালে চৈত্র মাসে যে দুর্গাপূজা বা বাসন্তীপূজা অনুষ্ঠিত হয়, তাতে বোধনের প্রয়োজন হয় না।
সাধারণত দেবী দুর্গার বোধন হয় ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। কিন্তু কিছু বছর যেমন এবার পঞ্জিকার নিয়মে দেখা যাচ্ছে ষষ্ঠী তিথি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বেশ রাত থেকে শুরু হচ্ছে বা পরের দিন বেশিক্ষণ নেই।
তাই শাস্ত্র মতে যদি ষষ্ঠীর উপযুক্ত সন্ধিকাল না পাওয়া যায়, তবে পঞ্চমীর দিন সন্ধ্যায়ই বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস করতে হয়। অর্থাৎ এবার ষষ্ঠী তিথি পুরোপুরি সন্ধ্যায় মিলছে না। তাই নিয়ম মেনে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় (শনিবার) দেবী দুর্গার বোধন করা হয়। তিথির কারণে এমনটা করা হয়।
পাঁচ দিনের এ উৎসব আজ বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে। এবার দেবী দুর্গার আগমন হয়েছে গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে চড়ে। আর দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়ছেন দোলা বা পালকিতে চড়ে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সিলেট মহানগর এলাকায় সার্বজনীন ১৪২টি ও পারিবারিক আয়োজনে ২০টি পূজো অনুষ্ঠিত হয়। সব মিলিয়ে সিলেট মহানগর এলাকায় সর্বমোট ১৬২টি ম-পে পূজো অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সার্বজনীন পূজো হয় ৪২৭টি এবং পারিবারিক পূজো হবে ২৯টি। সিলেট জেলার সার্বজনীন ও পারিবারিক মিলিয়ে সর্বমোট ৪৫৬টি পূজো হয়। সিলেট জেলা এবং সিলেট মহানগর মিলিয়ে সর্বমোট ৬১৮টি ম-পে দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজিত হয়।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় সার্বজনীন ৫৯টি ও পারিবারিক ৩টি, বালাগঞ্জ উপজেলায় সার্বজনীন ৩০টি ও পারিবারিক ২টি, কানাইঘাট উপজেলায় সার্বজনীন ৩১টি, জৈন্তাপুর উপজেলায় সার্বজনীন ১৯টি, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় সার্বজনীন ৪১টি ও পারিবারিক ১টি, বিশ্বনাথ উপজেলায় সার্বজনীন ২২টি ও পারিবারিক ২টি, গোয়াইনঘাট উপজেলায় সার্বজনীন ৪০টি, জকিগঞ্জ উপজেলায় সার্বজনীন ৮৪টি ও পারিবারিক ১টি, বিয়ানীবাজার উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ৪৩টি ও পারিবারিক ১১টি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সার্বজনীন ২৭টি এবং ওসমানীনগর উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ৩১টি ও পারিবারিক ৯টি পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট মহানগরের কোতোয়ালী মডেল থানা এলাকায় সার্বজনীন পূজো হবে ৩০টি ও পারিবারিক ১১টি, জালালাবাদে সার্বজনীন ১৬টি ও পারিবারিক ৪টি, এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় সার্বজনীন ৪০টি ও পারিবারিক ১টি, শাহপরাণ (র.) থানা এলাকায় সার্বজনীন ২৪টি ও পারিবারিক ১টি, দক্ষিণ সুরমায় সার্বজনীন ১৪টি ও পারিবারিক ১টি এবং মোগলাবাজারে সার্বজনীন ১৮টি ও পারিবারিক ২টি পূজো অনুষ্ঠিত হয়।