পাকিস্তানকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকি ভারতীয় সেনাপ্রধানের
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ৯:২৬:২৫ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: সীমান্তে সন্ত্রাসবাদে সমর্থন বন্ধ না করলে পাকিস্তানকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকি দিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেন, ‘আবারও যুদ্ধ শুরু হলে ভারতীয় সেনাবাহিনী সংযম দেখাবে না। পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা বন্ধ করো, নাহলে নিজেদের ভৌগোলিক অবস্থান হারাবে।’ একই সঙ্গে দেশটির বিমানবাহিনী প্রধান এপি সিং অপারেশন সিন্দুরের সময় পাকিস্তানের ৫টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি পুনরাবৃত্তি করেছেন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাজস্থানের অনুপগড়ে একটি সামরিক ফাঁড়িতে বক্তৃতায় এ হুমকি দেন ভারতীয় সেনাপ্রধান।
জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর ১.০ আমরা সংযম দেখিয়েছিলাম। কিন্তু এবার কোনো সংযম আর আমরা দেখাব না। এবার আমরা পাকিস্তানকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলব যে তারা ভাববে। পাকিস্তান যদি ভূগোলে (মানচিত্রে) তাদের জায়গা রাখতে চায় তাহলে তাদের অবশ্যই সীমান্তে রাষ্ট্র সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে হবে।’
তিনি দাবি করেন, অপারেশন সিঁদুরের মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের ভেতরে সন্ত্রাসীদের ক্যাম্প ও ঘাঁটিতে, বিশেষ করে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে। এসব অবকাঠামোতে হামলার মাধ্যমে বিশ্ববাসার কাছে প্রমাণিত হয়েছে পাকিস্তান নিজ দেশে সন্ত্রাসবাদকে লালনপালন করে। ভারত যদি ওই সময় ব্যবস্থা না নিত তাহলে পাকিস্তান এ সত্যকে আড়াল করত।
অন্যদিকে নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং অপারেশন সিন্দুরের সময় পাকিস্তানের ৫টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি পুনরাবৃত্তি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে কমপক্ষে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার নিশ্চিত খবর আছে। এর মধ্যে এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম (এইডব্লিউঅ্যান্ডসি) বিমান ও এফ-১৬সহ বিমানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে, যা প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে আঘাত হানে।’
এপি সিং দাবি করেন, ভারতীয় বাহিনী এত বেশি ক্ষতি করতে সক্ষম হয়েছিল যে পাকিস্তান বুঝতে পেরেছিল সংঘাত অব্যাহত থাকলে তাদের আরও বেশি ক্ষতি হবে, এর ফলে পাকিস্তানি পক্ষ যুদ্ধবিরতি চাইতে বাধ্য হয়। এতে প্রমাণিত হয় যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ নয়, বরং ইসলামাবাদের পক্ষ থেকেই শান্তি প্রার্থনা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতীয় ৬টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের পাকিস্তানি দাবিকে ‘মিথ্যা প্রচারণা’ এবং নিজেদের জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলেও মন্তব্য করে তিনি।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল নয়াদিল্লি। ইসলামাবাদ এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও গত ৭ মে ভোরে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারত। ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ পরিচালনা করে পাকিস্তান। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ। তবে ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করে আসছে ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, যুদ্ধ বন্ধে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিকভাবে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল, যেখানে তৃতীয় পক্ষের কোনো ভূমিকা ছিল না, এমনকি ট্রাম্পেরও কোনো কৃতিত্ব নেই।