গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ ৬ মামলার রায় হতে পারে চলতি বছরে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ৮:৩৪:৩৬ অপরাহ্ন

জালালাবাদ ডেস্ক : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতনের আগে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখতে সব ধরনের চেষ্টাই চালিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। আন্দোলন দমাতে দেশব্যাপী চালানো হয়েছিল নির্মম গণহত্যা। পরে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। সেই মামলার রায় চলতি বছরই ঘোষণা করা হতে পারে।
এদিকে, শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলা ছাড়া আরও পাঁচটি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলতি বছর শেষ হতে পারে। আগামী নভেম্বর বা ডিসেম্বরের মধ্যেই ছয়টি মামলার কার্যক্রম শেষ হয়ে যাবে বলে আশা রাষ্ট্রপক্ষের। তবে রায় চলতি বছর বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হতে পারে।
জুলাই-আগস্ট হত্যাকা-ের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২-এ। বর্তমানে এ দুই ট্রাইব্যুনালে চারটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সর্বশেষ সাক্ষীর জবানবন্দি শেষ হয়েছে। এখন তার জেরা শেষ হলে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে। এরপর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের দিন ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) জবানবন্দি শেষে জেরার কার্যক্রম চলছে। জেরা শেষ হতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই নিয়ম অনুযায়ী আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষী হওয়ার কথা। কিন্তু শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণের সুযোগ নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলায় যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শুরু হবে। যুক্তি-তর্ক শেষে রায়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। তবে কবে নাগাদ মামলায় রায় হতে পারে সেটি নিয়ে মুখ খোলেননি প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের কেউই।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চিফ প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ৫৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে এই মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীর জবানবন্দি দিয়েছেন। এখন তার জেরা চলছে। তার জেরার মধ্য দিয়েই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হবে।
মিজানুল ইসলাম আরও বলেন, এই মামলার দুজন আসামি পলাতক থাকায় তারা সাফাই সাক্ষ্য (ডিফেন্স উইটনেস) দেওয়ার সুযোগ পাবেন না। ফলে আইওর সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হচ্ছে। এরপর আমরা এক সপ্তাহ সময় নেব যুক্তিতর্ক প্রস্তুতির জন্য। এরপর ডিফেন্সের যুক্তিতর্কে কত দিন লাগবে সেটা তারা জানেন। মামলার কার্যক্রম কবে শেষ হবে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত চিফ প্রসিকিউটর বলেন, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে না হলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে শেষ হতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে দিনক্ষণ ঠিকঠাক না বলতে পারলেও চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে কমপক্ষে ছয়টি মামলার কার্যক্রম শেষ হতে পারে। তবে রায় ঘোষণার এখতিয়ার সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালের। তবে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশন টিম আশাবাদী।







