রোববার শুরু ক্যাম্পেইন : বিপজ্জনক টাইফয়েড ভ্যাকসিনের ৮৫ শতাংশই কার্যকর
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ৯:৩৪:১৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে টাইফয়েড। আর এ জন্য দায়ী সালমোনেল্লা টাইফি নামক এক ব্যাক্টেরিয়া। এর নতুন নতুন প্রজাতি হানা দিচ্ছে। সালমোনেল্লার নতুন রূপ ঢুকেছে এ দেশেও। এই গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার টাইফয়েড ভ্যাকসিন প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। আর এই ভ্যাকসিন টাইফয়েড প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশই কার্যকর। সিলেটসহ সারা দেশে আগামী ১২ অক্টোবর রোববার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। চলবে ১৮ কর্মদিবস। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু এবং পাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি/সমমান পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ১ ডোজ টাইফয়েডের টিকা দেয়া হবে।
সরকার ৫ কোটি শিশুকে এই টিকা দেয়ার টার্গেট নিয়েছে। ইতিমধ্যে ১ কোটি ৫৮ লাখ শিশু টিকা নিতে নাম নিবন্ধন করেছে। নিবন্ধনের শীর্ষে রয়েছে সিলেট। সিলেট বিভাগে ভ্যাকিস পাবে ৩০ লাখ।
নিবন্ধিত শিশু ক্যাম্প চলাকালীন সিলেটের যে কোনো ক্যাম্প থেকে টিকা দিতে পারবে। অনিবন্ধিত শিশুদের বিকল্প ব্যবস্থায় টিকা নিশ্চিত করা হবে। দুর্গম এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বা ভাসমান জনগোষ্ঠীর শিশুদের এ টিকা নিশ্চিত করা হবে। এ কার্যক্রমের বাইরে থাকবে না কোন শিশু।
বৃহস্পতিবার সিলেট নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার, সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান, সিসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো: নাসির উদ্দিন, ইউনিসেফ সিলেট অঞ্চলের প্রধান দিল আফরোজা ইসলাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডা. খালিদ বিন লুৎফর প্রমুখ।
এসময় জানানো হয়, টাইফয়েড প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত টিসিভি টিকা নিরাপদ ও কার্যকর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবহির্ভূত শিশুদের ইপিআই কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়া হবে। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের ঊরুর মাংসপেশিতে এবং দুই বছরের বেশি বয়সী শিশুদের বাহুর উপরিভাগে ০.৫ এম. এল. (মিলিলিটার) ইনজেকশন দেওয়া হবে। বাংলাদেশে নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাই টাইফয়েডে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে। তাই এই বয়সী শিশুদের এক ডোজ টিকা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
সিলেট জেলা :
সিলেট জেলার ১৩ উপজেলায় মোট ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৮০ শিশুকে খাওয়ানো হবে টাইফয়েড ভ্যাকসিন। এরমধ্যে স্কুল পর্যায়ে ছাত্রী সংখ্যা ২ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৯৯ এবং ছাত্র ২ লক্ষ ৭০ হাজার ৬০১। এছাড়া ৯ মাস থেকে ১৫ বছর কম বয়সী ছেলে শিশু সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫৫৬ এবং মেয়ে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৯২৪। জেলায় মোট স্থায়ী কেন্দ্র ১২টি ও অস্থায়ী কেন্দ্র ২৪০০। জেলার সর্বমোট ৩ হাজার ৫৩৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশুকে দেয়া হবে ভ্যাকসিন।
সিলেট নগর :
সিলেট নগরে মোট ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৫২২ শিশুকে খাওয়ানো হবে টাইফয়েড ভ্যাকসিন। এরমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ লক্ষ ১০ হাজার ১৫৩ এবং কমিউনিটির (৯ মাস থেকে ১৫ বছর কম বয়সী) ৫২ হাজার ৩৬৯। সিলেট নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে মোট কেন্দ্র সংখ্যা ৮৩৬টি। এরমধ্যে অস্থায়ী ৮৩২ এবং স্থায়ী ৪টি কেন্দ্রে দেয়া হবে ভ্যাকসিন।
সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মো জাহিদুল ইসলাম জানান, টাইফয়েড ভ্যাকসিন ৮৫ শতাংশই কার্যকর। তাই গুরুত্ব সহকারে এ ভ্যাকসিন দিতে সব প্রস্তুুতি সম্পন্ন করেছে সিটি করপোরেশন। তিনি বলেন, শেষ ভ্যাকসিন থাকা পর্যন্ত শিশুদের তা প্রদান করা হবে। সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন সফলভাবে বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।