১০ কর্মদিবসে তদন্তের নির্দেশনা ৮ মাসেও হয়নি
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ৭:০৯:০৮ অপরাহ্ন
বড়লেখায় প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতি

বড়লেখা প্রতিনিধি: বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার দাসের বিরুদ্ধে প্রায় এক বছর আগের অনিয়ম-দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ ১৩ জন এলাকাবাসী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবর প্রদান করেন।
চলিত বছরের ২২ জানুয়ারি জরুরী ভিত্তিতে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগসমূহ সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দিতে বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা অফিসারকে চিঠি দিলেও ১০ কার্যদিবসের তদন্তটি ৮ মাসেও হয়নি।
অবশেষে সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালকের পুনঃনির্দেশে আগামীকাল সোমবার বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিযোগ সমূহের তদন্তে যাচ্ছেন জেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনিছুর রহমান।
অভিযোগ রয়েছে, মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা অফিসের প্রধান সহকারি দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে লাখ টাকা ঘুঘ নিয়ে তদন্তের নির্দেশনার চিঠি দীর্ঘ ৮ মাস গায়েব রাখেন। অভিযোগকারীরা সম্প্রতি বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে তাগিদ করায় জেলা শিক্ষা অফিসে ৮ মাস চেপে (গায়েব করা) রাখা অভিযোগ সচল হয়। গত ৫ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা জেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনিছুর রহমান অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও অভিযোগকারীদের নোটিশ প্রদান করেছেন।
শিক্ষার্থী অভিভাবক তারেক আহমদসহ ৯ জন এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার দাস বিদ্যালয়ের পুরাতন সীমানা প্রাচীর ও লোহার ফটক বিধি বর্হিভূতভাবে ভেঙে বিক্রিত অর্থ আত্মসাৎ করেন। স্কুলের মাঠ ও রাস্তার পাশের ছায়াবৃক্ষ ব্যক্তিগত স্বার্থে কাটেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুটি প্রকল্পে (সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও মাঠ ভরাট) ১ লাখ ২ হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ পেয়ে কাজ না করেই অর্থ আত্মসাৎ করেন। নতুন ভবন ও নতুন ওয়াসব্লক থাকা সত্ত্বেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ওয়াসব্লক বাবদ ২০ হাজার টাকা, মেইনটেন্যান্স বাবদ ৭০ হাজার টাকাসহ ১ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ করেন।
নিলামকৃত ছয় কক্ষবিশিষ্ট পুরাতন ভবনের ৯৫ জোড়া ডেস্ক-বেঞ্চ, ৫টি টেবিল, ৫টি চেয়ার ও ৬টি সচল ফ্যান সরিয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি গুদামে এক বছরেরও বেশি সময় সংরক্ষণ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষা অফিসের নির্দেশে মুছেগুল বিদ্যালয়কে ১৬ জোড়া পাঠিয়ে বাকি ফার্নিচার, গেটসহ পুরাতন মালামাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগকারী তারেক আহমদ জানান, স্কুলের নতুন ভবনের বেইজ বসানোর অজুহাতে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলেনি। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবরে পুনরায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিভাগীয় অফিস থেকে চলিত বছরের ২২ জানুয়ারি সরেজমিন তদন্তপূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রেরণের নোটিশ জারি হলেও প্রধান শিক্ষক অর্থের বিনিময়ে বিভাগীয় ও জেলা শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে তা চাপা রাখেন।
মৌলভীবাজার জেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনিছুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক রনজিৎ কুমার দাসের বিরুদ্ধে উপ-পরিচালক বরাবর প্রেরিত অভিযোগসমূহ তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। সোমবার সরেজমিনে তদন্ত করতে অভিযোগকারিদের ও অভিযুক্তকে নোটিশ প্রদান করেছেন।







