জকিগঞ্জে দুলাভাইকে হত্যার দায় স্বীকার শ্যালকের
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৮:২০:৩১ অপরাহ্ন

জকিগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ বাজারের আলোচিত ব্যবসায়ী নোমান উদ্দিন হত্যা মামলায় একে একে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে নিহতের শ্যালক ও মামলার একমাত্র গ্রেফতার আসামি হানিফ উদ্দিন সুমন। চার দিনের রিমান্ড শেষে রোববার তাকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে ম্যাজিস্ট্রেট ইবরাহিম সরকার তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মোমেন আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে জানান, হানিফ উদ্দিন সুমন ২০০৯ সাল থেকে তার দুলাভাই নোমান উদ্দিনের বাড়িতে বসবাস করতেন। ২০২৩ সালে বিয়ে করার পরও তিনি স্ত্রীসহ দুলাভাইয়ের সংসারেই বসবাস অব্যাহত রাখেন। নিহত নোমান উদ্দিন দীর্ঘদিন সৌদি আরবে প্রবাসে ছিলেন এবং প্রবাসে অবস্থানকালে পরিবারের দায়িত্ব ও আর্থিক লেনদেনের সবকিছুই শ্যালক সুমনের ওপর ন্যস্ত করেন।
প্রবাসে থাকা অবস্থায় নোমান উদ্দিন নিয়মিতভাবে উপার্জিত অর্থ সুমনের নামে পাঠাতেন। কিন্তু দেশে ফিরে পাঠানো টাকার হিসাব চাইলে সুমন কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়। এতে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়, যা ক্রমে চরম আকার ধারণ করে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ একাধিকবার সালিশ বৈঠক করলেও কোনো সমাধান হয়নি। এরপর নিহত নোমান উদ্দিনের বসতবাড়ি নিয়েও নতুন করে দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। শ্যালক সুমন তার দুলাভাই নোমান উদ্দিনের বসতবাড়িটি নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো। এতে তাদের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে ওঠে। এই বিরোধ থেকেই পরিকল্পিতভাবে হত্যার পথ বেছে নেয় সুমন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সুমন কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে নোমান উদ্দিনকে হত্যা করে এবং পরে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ধানক্ষেতে ফেলে রাখে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতে সুমন নানা কৌশলে পুলিশের প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেও পরবর্তীতে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করে পেছনের কারণ এবং সহযোগী কয়েকজনের নামও প্রকাশ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সুমন বলেন, দুলাভাই নোমান উদ্দিনের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের শত্রুতা ছিল। প্রায় ২৫ বছরের প্রবাস জীবনে পাঠানো টাকার হিসাব চাওয়াকে কেন্দ্র করেই বিরোধের সূত্রপাত হয়। ওই বিরোধ থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় হত্যার পরিকল্পনা।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় সুমন তার দুলাভাই নোমান উদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে আরও কয়েকজন সহযোগীর নাম দিয়েছে, যারা বর্তমানে পলাতক। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে পুনরায় রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।







