ঢাকায় সিলেট বিএনপির ১২৯ মনোনয়নপ্রত্যাশীর বৈঠক : এখনো চূড়ান্ত নয় কোনো প্রার্থী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৯:২১:২২ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট বিভাগের ১৯টি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় রয়েছেন ১২৯ জন নেতাকর্মী। তবে এখন পর্যন্ত কারও মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়নি এবং কাউকে বাদও দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে জেলা ভিত্তিক পৃথক পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বৈঠকে জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের প্রতিটি আসনে ত্যাগী, জনপ্রিয় ও যোগ্য নেতাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারিত হওয়ার পর বাকিদের দায়িত্ব হবে ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে বিজয়ী করতে কাজ করা।
অভ্যন্তরীণ বিরোধ ঠেকাতে হুঁশিয়ারি :
প্রার্থীতার প্রচারে যেন কোনোধরণের বিভাজন না তৈরি হয়, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেন মহাসচিব। তিনি বলেন, প্রচারণার নামে দলীয় ঐক্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক শাস্থি দেওয়া হবে।
তথ্যভিত্তিক যাচাই-বাছাই চলছে :
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের প্রার্থী বাছাইয়ে বিএনপি ডিজিটাল ডেটাবেজ ভিত্তিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। প্রার্থীদের ৫টি যোগ্যতা ও ৫টি অযোগ্যতার ভিত্তিতে একটি স্বয়ংক্রিয় র্যাংকিং তৈরি হচ্ছে, যা মনোনয়ন কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে।
যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে:
রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও কর্মকান্ড, জনসম্পৃক্ততা, সাংগঠনিক দক্ষতা, পারিবারিক ও রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা।
অযোগ্যতার মধ্যে রয়েছে :
বিদ্রোহী কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততা, ফৌজদারি অপরাধে জড়িত থাকা, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধা গ্রহণ, নির্বাচনী এলাকায় অগ্রহণযোগ্যতা ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততা।
বিকল্প প্রার্থী তালিকা তৈরি:
বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানান, প্রতিটি আসনে একজনকে চূড়ান্ত প্রার্থী করা হবে, তবে বিকল্প হিসেবে আরও দুইজনের নাম সংরক্ষণ করা হচ্ছে। চূড়ান্ত প্রার্থীর কোনো সমস্যা হলে বিকল্প তালিকা থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। যাঁরা মনোনয়ন পাবেন না, তাঁদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।বৈঠকে উপস্থিত সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিলেট-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আজকের বৈঠকে মহাসচিব মূলত দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। কাউকে বাদ দেওয়া হয়নি, আবার কাউকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
বিএনপির একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানায়, এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা এবং মাঠপর্যায়ে বিশৃঙ্খলা রোধ করা। প্রার্থীতার বিষয় নিয়ে আগাম প্রচারণা ও বিভক্তি যেন সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, আজকের বৈঠকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বক্তব্য শোনা হয়েছে। কাউকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমাদের মহাসচিব প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীকে মাঠে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া দল যাকে চুড়ান্ত মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে কাজ করার জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অঙ্গিকার নেয়া হয়। তিনি বলেন, বিএনপি বড় দল, তাই মনোনয়ন প্রত্যাশীও বেশী। দীর্ঘদিন দেশে গণতন্ত্র না থাকায় সকলেই কমবেশী বঞ্চিত। তবে দলের স্বার্থে সবাইকে সেক্রিফাইস করতে হবে।





