গাজা নিয়ে সৌদির গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ৮:১৬:২৩ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া এ চুক্তির আলোকে যুদ্ধবিরতির পর গাজায় নতুন করে শাসন ব্যবস্থা গঠনের কথা বলা হয়েছে। এমন বাস্তবতায় সৌদি আরব যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার নেতৃত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন একটি গোপন পরিকল্পনার তথ্য প্রকাশ করেছে মিডল ইস্ট আই।
রিয়াদ গাজার শাসক দল হামাসকে নিরস্ত্র ও প্রভাবহীন করার পাশাপাশি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ) আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তা দিয়ে পুনরায় শক্তিশালী করতে চায় বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করেছে মিডল ইস্ট আই।
মিডল ইস্ট আই জানায়, গাজা উপত্যকা ও ফিলিস্তিনি ভ‚খÐে স্থিতিশীলতা বাড়াতে সৌদি আরব নিজের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে চায়। এটি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গাজার শাসনব্যবস্থায় হামাসের ভ‚মিকা কমানো এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে এমনভাবে সংস্কার করা হবে, যাতে ১৯৬৭ সালের সীমানার ভিত্তিতে জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের জন-আকাক্সক্ষা পূরণ হয়।
সৌদি আরব মনে করে, হামাস শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং বিভাজনকে আরও গভীর করছে, তাই গোষ্ঠীটির প্রভাব কমানো জরুরি। হামাসকে নিরস্ত্র করার কাজটি হবে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চুক্তির মাধ্যমে ধাপে ধাপে, যা নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া সৌদি আরব গাজায় একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের উদ্যোগকে সমর্থন করবে। এমন একটি বাহিনীতে সৌদি আরবসহ অন্য আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ অংশ নিতে পারে।
রিয়াদ মনে করে, গাজায় প্রশাসনিক দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলে হামাসের প্রভাব কমবে। এই প্রক্রিয়াকে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সঙ্গে সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো উদ্যোগটি মিসর, জর্ডান ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী কর্মকর্তা মানাল বিনতে হাসান রাদওয়ান।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ২০০৭ সালের পর থেকে গাজায় কোনো উপস্থিতি বজায় রাখতে পারেনি। সে সময় হামাসের নির্বাচনী বিজয়কে কেন্দ্র করে ফাতাহ ও হামাসের সংঘর্ষ শুরু হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি মোকাবিলা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার মাধ্যমে সৌদি আরব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার আনতে চায়। সৌদি ফিলিস্তিনি জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তাও দেবে। এ ছাড়া ‘ফিলিস্তিনি জাতীয় সংলাপের’ আহŸান জানানো হয়েছে, যাতে বিভিন্ন গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। সৌদি আরব এই সংলাপকে সহায়তা করতে আঞ্চলিক কর্মশালা ও সম্মেলনের আয়োজন করবে। তবে হামাসকে এই সংলাপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। পুরো প্রতিবেদনে ইসরায়েলের নাম একবারও আসেনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বলেছেন, সৌদি আরব যদি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায়, তবে তেল আবিব তা প্রত্যাখ্যান করবে।






