দেশে কমলেও এবারও সিলেটে বেড়েছে হজ যাত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৫:০৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয়ভাবে কমলেও এবার সিলেটে বেড়েছে হজ যাত্রীর সংখ্যা। আগামী বছর সিলেট থেকে হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন ৩ হাজারেরও বেশী যাত্রী। গত বছর সিলেট থেকে হজে গিয়েছিলেন ২ হাজার ৬৫০ জন। ফলে এবছর ৫ শতাধিক যাত্রী বেড়েছে। এছাড়া শেষ পর্যন্ত এই সংখ্যাটা আরো বাড়তে পারে। ঢাকা থেকে যারা রেজিষ্ট্রেশন করেছেন তাদের হিসেবটা শেষ দিকে যোগ হয়।
হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) ও এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ করে এই তথ্য জানা গেছে। তারা জানান, সিলেট থেকে এবার ৩ হাজার ৮৪ জন হজযাত্রী রয়েছেন। বিশেষ করে এবারের হজ কোটা ব্যবস্থাপনায় এজেন্সিপ্রতি এক হাজার হজযাত্রী বেঁধে দেওয়ায় তারা চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়েন। সিলেট অঞ্চলে শতাধিক এজেন্সি কাজ করলেও ২০/২২টি এজেন্সি মাঠে ছিল সক্রিয়। পরে তারা সম্মিলিতভাবে লিড এজেন্সির মাধ্যমে সিলেটের হজযাত্রীদের নিবন্ধনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেটে ২২টি এজেন্সীর মধ্যে আকাবা ট্রেডিং কর্পোরেশন ৪১ জন, আল মনসুর এয়ার সার্ভিস লিঃ ৫৩ জন, মেসার্স যাত্রীক ট্রাভেলস ৬৮ জন, সিপার এয়ার সার্ভিস, ৯৫ জন, সিটি ওভারসীজ ১২১ জন, এলাইট ট্রাভেলস ৪২৬ জন, আলফা ট্রাভেল ইন্টাঃ ৩৫ জন, নিউ মডার্ন ট্রাভেল ইন্টাঃ ৩ জন, লতিফ ট্রাভেলস প্রাঃ লিঃ ৫৬৮ জন, শিপুল ওভারসীজ ১৫৫ জন, খাজা এয়ার লাইনার ১৬২ জন, ট্রাভেলন এয়ার সার্ভিস ১১৯ জন, আল-ইহসান ট্রাভেলস ২৪৭ জন, আবাবিল এয়ার সার্ভিস ৪৮ জন, আল শরীফাইন ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস ৬১ জন, ডিসকভারি সিলেট ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস ১ জন, ইক্বরা ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস ২৫০ জন, সোমা ইন্টাঃ সার্ভিস ১৬০ জন, সান সাইন ট্রাভেলস ১২৪ জন, তাসফিক ট্রাভেলস ৫৩ জন, নিবরাস ইন্টাঃ ৭৫ জন ও রাব্বানি ওভারসীজ এভিয়েশন ২১৯ জন হজ যাত্রীর নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
গত বছর সিলেট থেকে ৫টি সরাসরি ফ্লাইট দেয়া হয়েছিল। এবার হজ যাত্রী বৃদ্ধি পাওয়ায় ৮টি সরাসরি ফ্লাইট দাবী করছেন হাব সিলেটের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া শেষ সময়ে সিলেটের আরও কিছু হজ যাত্রী বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ অনেকেই ঢাকা থেকে নিবন্ধন সম্পন্ন করলেও যেতে চান সিলেট থেকে। তাই এবার সরাসরি ফ্লাইটের দাবী জোরালো হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে হজ নিবন্ধনে। প্রতি বছর মোট হজযাত্রীর ১০ শতাংশের কম কোটা বরাদ্দ হয়, এবার তাও পূরণ করতে পারেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়। নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি করেও হজযাত্রী পায়নি তারা।
চলতি বছর ২৭ জুলাই থেকে হজযাত্রীদের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর প্রায় তিন মাসে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের প্রাথমিক নিবন্ধন করেছে মাত্র ৭৩ হাজার ৪১৬ জন হজযাত্রী। যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৫৭ শতাংশ। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা।
এবার হজে যেতে আগ্রহী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। ১৬ অক্টোবর ছিল সরকারি ও বেসরকারি-এই দুই ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনের শেষ সময়। কিন্তু এবার কাঙ্খিত সাড়া মেলেনি। অনেক মুসলমানের ইচ্ছে থাকার সত্তে¡ও অতিরিক্ত বিমান ভাড়া ও নিবন্ধনের বাড়তি আর্থিক চাপ সামলাতে না পেরে নিয়ত করেও হজে যেতে পারছেন না। হজের নিবন্ধনের সময়ও আর বৃদ্ধি করা হবে না বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এখনো হজের কোটা খালি রয়েছে ৫৩ হাজার ৭৮২ জনের। শতকরা হিসাবে প্রায় ৪৩ শতাংশ।
জানা যায়, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন মোট চার হাজার ১০২ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৬৯ হাজার ৩১৪ জন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ২৬ মে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর সরকারিভাবে তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ঘোষিত হজ প্যাকেজ-১ (বিশেষ) এর খরচ ধরা হয়েছে ছয় লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা। হজ প্যাকেজ-২ এ খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা এবং হজ প্যাকেজ-৩ এ খরচ ধরা হয়েছে চার লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা। এই প্যাকেজের বাইরে রয়েছে খাবার খরচ। একইভাবে একদিন পর বেসরকারিভাবে তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে হাব। এর মধ্যে সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ১০ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) সিলেট অঞ্চল সেক্রেটারী ও ইক্বরা ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের পরিচালক আব্দুল কাদির জানান, এবার সিলেটে হজ যাত্রী বেড়েছে। যদিও জাতীয়ভাবে কমেছে। যেহেতু যাত্রী বেড়েছে সেহেতু সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানো দাবী জানাবো আমরা। গত বছর আড়াই হাজার যাত্রী ছিল ৫টি সরাসরি ফ্লাইট দেয়া হলেও ফ্লাইটে অন্য বিভাগের যাত্রীরা ছিল। এবার আমরা সরাসরি শুধু সিলেটের যাত্রীদের জন্য ৮টি সরাসরি ফ্লাইটের দাবী জানাবো।







