চৌহাট্টায় ৬ ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৮:৫১:২৫ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট নগরীতে ফের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিচ্ছিন্ন করা বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনসহ ১১ দফা দাবি জানিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে দাবি আদায়ে অনড় শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে শ্রমিকরা সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেন। এরপর টানা ৬ ঘন্টা তারা সেখানে রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তারা রাস্তা ছেড়ে চলে যান। তবে পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে কোন অনাকাঙ্খিত না ঘটলেও নগরীর ব্যস্ততম রাস্তাটি দীর্ঘ সময় অবরোধ করে রাখার ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।
তাদের টানা অবস্থান কর্মসূচির কারণে জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নগরজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন।এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর আম্বরখানা থেকে মিছিলসহ শ্রমিকরা সমাবেশস্থলে যান। পথে তারা ‘রিকশা ফিরিয়ে দাও’, ‘লাইসেন্স দাও’, ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি করো’Ñ এসব ¯েøাগান দিতে দিতে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে পৌঁছান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত অন্যায় ও অমানবিক। এটি প্রত্যাহার না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। এই বাহন পরিবেশবান্ধব এবং নি¤œআয়ের হাজারো শ্রমিক পরিবারের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। প্রশাসনের সিদ্ধান্তে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বলে দাবি করেন তারা।
এর আগে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একই দাবি তোলেন সংগঠনের আহŸায়ক মাসরুখ জলিল। তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা শুধু পরিবেশ বান্ধবই নয়, আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছে। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২৪ জন রিকশাচালক জীবন দিয়েছেন।
তার অভিযোগ, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এই বাহনকে অপপ্রচার চালিয়ে অবৈধ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের উচিত ছিল বিআরটিএর মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়ন ও লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু করা।
সমাবেশে পেশ করা তাদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছেÑ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, আটক যানবাহন ফেরত দেওয়া, চার্জিং গ্যারেজের বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন, রিকশার লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন চালু করা, শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ করা এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়া।
এসএমপির কোতোয়ালী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাটারি রিকশা চালকরা দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চৌহাট্টা পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে এই রাস্তাটিতে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ জনগণ বিপাকে পড়েন। পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকায় তারা কোন অরাজকতা করার সুযোগ পায়নি।
প্রসঙ্গত- গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এ অভিযানে বহু রিকশা জব্দ এবং একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে নগরীতে ব্যাটারি রিকশার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।







