প্রকৃতিতে অক্সিজেন যোগানোর কারখানা কমলগঞ্জের নার্সারী পল্লী
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ৭:০৭:৪১ অপরাহ্ন

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রকৃতিতে এখনো সতেজতা। এর মধ্যে নার্সারীগুলোতে চলছে চারা উৎপাদন ও বিক্রির হিড়িক। গাছ লাগানো ও বাগান করার উপযুক্ত মৌসুম অতিবাহিত হচ্ছে। এই মৌসুমেই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের নার্সারী পল্লীগুলো সবুজ প্রকৃতি গড়ার ভাণ্ডার ও অক্সিজেন যোগানোর এক অদম্য কারখানা হিসাবে পরিচিত। নার্সারীগুলোতে চা বাগানের বেকার শত শত নারী পুরুষ খুঁজে পেয়েছেন কর্মসংস্থানের সন্ধানও। উৎপাদিত গাছ ও ফুল ফলের চারা বিক্রি করে বিপুল আয় করছেন নার্সারী মালিকরা।
চা বাগান, বনাঞ্চল আর কৃষি অধ্যুষিত কমলগঞ্জ উপজেলায় নার্সারী ব্যবসায় বিপ্লব দেখা দিয়েছে। সবুজ প্রকৃতি গড়ার কারিগর নার্সারী মালিকরা হাটবাজারে, রাস্তার ধারে এবং গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গড়ে তুলছেন নার্সারী শিল্প। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে উঠা ছোট বড় নার্সারী মালিকরা চারা বিক্রি করে সফলতা লাভ করছেন। নার্সারী মালিকদের কেউ কেউ রয়েছেন প্রশিক্ষিতও।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় শতাধিক নার্সারী গড়ে উঠেছে। শমশেরনগর বাজার থেকে কুলাউড়া ও পতনঊষার সড়কে এবং শ্রীসূর্য্য গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে অর্ধশতাধিক নার্সারী। জমি ইজারা নিয়ে কিংবা নিজস্ব জমিতে নার্সারী গড়ে তুলেছেন অনেকে। গত কয়েক বছর যাবত নার্সারী সমুহে দেশী-বিদেশী নানা প্রজাতির গাছ, ফুল ও ফলের চারা উৎপাদন ও বিক্রয় করছেন। দেশীয় প্রজাতির বনজ, ফলজ, ঔষধী ও বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছের চারার চাহিদা রয়েছে নার্সারীগুলোতে। তবে বিদেশী প্রজাতির আকাশমনি গাছ নিষিদ্ধ হওয়ায় অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাওয়ার সময় লোকজন এসব নার্সারী থেকে চারা কিনে নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনা ও পতিত জমিতে বাগান গড়ে তুলছেন।
উপজেলার শমশেরনগর ও পতনউষার ইউনিয়নেই রয়েছে বাহারী নমুনার একাধিক নার্সারী। এসব নার্সারীতে চা বাগানসহ স্থানীয় শ্রমিকরা খোঁজে নিয়েছেন আয়ের পথ। এক একটি নার্সারীতে সাত, আট জন থেকে শুরু করে পনের, বিশ জন করে শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। চা বাগানের বেকার নারী ও পুরুষরা দৈনিক ভিত্তিতে নার্সারীগুলো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
শমশেরনগর ঈগল নার্সারীর মালিক আজাদুর রহমান ও মাহি নার্সারীর মালিক সাহাবুদ্দিন বলেন, বিগত ১৪/১৫ বছর ধরে আমরা নার্সারী ব্যবসার সাথে জড়িত। বন বিভাগ ও কৃষি বিভাগ থেকে মাঝে মধ্যে প্রশিক্ষণও নিয়েছি। তবে চারা উৎপাদনে ইউক্যালিপটাস চারা ব্যতীত অন্য কোন চারার ক্ষতিকর সম্পর্কে কোন ধারণা দেয়া হয়নি। তাদের নার্সারীগুলোতে বিদেশী প্রজাতির আকাশমনি, আকাশিয়া ক্রস, বেলজিয়াম এধরণের চারার সংখ্যাই অত্যধিক। এগুলোর সাথে সাথে দেশী জাতের আম, জাম, কাঁঠাল, লেবু, পেয়ারা, জলপাই, পেঁপে এবং নিম ও আগরসহ কিছু কিছু ঔষধি গাছের চারা রয়েছে। তারা আরো বলেন, অল্প সময়ে বেড়ে উঠে বলে এখন সর্বত্র আকাশমনি, বেলজিয়াম জাতীয় গাছের চাহিদা রয়েছে।
তবে স্থানীয় পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে চলা গাছের বিষয়ে বন বিভাগ বা কৃষি বিভাগ থেকে চারা উৎপাদনের বিষয়ে নার্সারী মালিকদের কোন ধারণা বা দিক নির্দেশনাও দেয়া হয়নি বলে নার্সারী মালিকরা জানান।







