সিলেটে হচ্ছে ‘বর্ডার ড্রাইভ’
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ৯:০৮:৫২ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোটার : সিলেটের পর্যটন স্পট ঘিরে কক্সবাজারের ‘মেরিন ড্রাইভের’ আদলে ‘বর্ডার ড্রাইভ’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আগামী জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা ও সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন তুলে ধরা হবে। প্রকল্পটিতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮শ’ কোটি টাকা।
জানা গেছে, সিলেট জেলার প্রায় সবকটি পর্যটনকেন্দ্রের অবস্থান সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায়। কিন্তু অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও লিংক রোড না থাকায় এক পর্যটনকেন্দ্র থেকে অপরটিতে যেতে পর্যটকদের পোহাতে হয় মারাত্মক ভোগান্তি। এতে সময় ও ব্যয় দুটোই বেশি লাগছে। যোগাযোগ ভোগান্তির কারণে সম্ভাবনাময় অনেক পর্যটনস্পটে যেতে পারেন না পর্যটকরা। ফলে সম্ভাবনাময় পর্যটনখাতের বিকাশ ঘটছে না। অনেক পর্যটনকেন্দ্র রয়ে গেছে অগোচরে।
গত ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মুজিবুর রহমান। সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনার বিকাশে তিনি ‘সিলেট-জাফলং-সাদাপাথর-ওসমানী বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করেন। এতে পর্যটনখাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও পরামর্শ দেন তিনি। সম্মেলন থেকে প্রস্তাবনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাক্রমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ-সওজ সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত সিলেট-জাফলং-সাদাপাথর-ওসমানী বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের মধ্যে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক হয়েই ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। সিলেট শহর থেকে জাফলং পর্যন্তও রয়েছে ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা। কেবলমাত্র জাফলং থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত অভ্যন্তরিণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা গেলে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সওজ সূত্র আরও জানায়, এজন্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, পুনর্নিমাণ ও প্রশস্ত করতে হবে। ভারত সীমান্ত ঘেঁেষ সড়কটি নির্মিত হলে পর্যটকরা সীমান্ত এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘বর্ডার ড্রাইভ’ হলে পর্যটকরা মাত্র দুইদিনে সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) ও শাহপরান (র.) মাজার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, লাক্কাতুড়া চা বাগান, বাইশটিলা, খাদিম রিসোর্ট, সাদাপাথর, বিছানাকান্দি, উতমাছড়া, দমদমছড়া, লক্ষণছড়া, পান্থুমাই, খাসিকম, জাফলং, তামাবিল, নলিউরি ফলস, ডিবিরহাওর, জৈন্তাপুর, লালাখাল ও রাতারগুলসহ ২৩টি পর্যটনস্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। বর্তমানে একদিনে দুই থেকে তিনটির বেশি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা সম্ভব হয় না।
এ ব্যাপারে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমীর হোসেন জানান, প্রকল্পটির সর্বশেষ অবস্থা জেলা প্রশাসক সম্মেলনে উত্থাপন হবে। সীমান্তকে সামনে রেখে এবং ঘরবাড়ি পেছনে রেখে সড়কটি নির্মাণের পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে যেতে যেতে পর্যটকরা সীমান্তের অপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন। যে কারণে সড়কটির নাম ‘বর্ডার ড্রাইভ’ দেওয়া হয়েছে। এটি নির্মিত হলে সিলেটের পর্যটনের বিকাশ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।





