মন্ত্রণালয়-দপ্তরে বৈষম্য প্রকট, আজ পর্যালোচনা সভা
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ৭:৫৬:১৩ অপরাহ্ন

জালালাবাদ ডেস্ক: মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মচারীদের মধ্যে পদবি ও বেতনস্কেল বৈষম্য রয়েছে। এ নিয়ে অধিদপ্তর ও সংস্থার কর্মচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দপ্তর, অধিদপ্তর, সংস্থা ও এর আওতাধীন প্রধান সহকারী/সহকারী, উচ্চমান সহকারী পদবিগুলোকে সচিবালয়ের মতো প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং স্টেনোগ্রাফার পদবিকে ব্যক্তিগত কর্মকর্তা করে দাপ্তরিক পদবি ও বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবি জানিয়েছেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আগামীকাল সোমবার পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সচিবালয়সহ বাংলাদেশের সব অধিদপ্তর ও এর আওতাধীন দপ্তরসমূহের প্রধান সহকারী/সহকারী, উচ্চমান সহকারী, শাখা সহকারী, বাজেট পরীক্ষক ও স্টেনোগ্রাফার পদবির নিয়োগবিধি, কর্মপরিধি, বেতন স্কেল এক ও অভিন্ন ছিল। ১৯৯৫ সালে শুধু সচিবালয়ের প্রধান সহকারী, শাখা সহকারী, উচ্চমান সহকারী, বাজেট পরীক্ষক পদবিগুলোকে একীভূত করে প্রশাসনিক কর্মকর্তায় পদবি এবং স্টেনোগ্রাফার পদবি পরিবর্তন করে ব্যক্তিগত কর্মকর্তায় পরিবর্তন করা হয়। ১৯৯৭ সালের ২৮ এপ্রিল ওই পদবি দুটির ১৪ ও ১৩ গ্রেড থেকে বেতন ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। ১৯৯৯ সালে ওই পদবিকে দশম গ্রেডে উন্নীত করে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি), বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), গণভবন, বঙ্গভবন, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট (হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ)-এর পদবিও পরিবর্তন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তাকরণসহ বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। ইতোমধ্যে সরকার এ পদবির সমপদ বা এর নিম্ন গ্রেডের অনেক পদবি আপগ্রেড করেছে। যেমন- ব্লক সুপারভাইজার, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, নার্স, পুলিশের এসআই ইত্যাদি দশম গ্রেডসহ দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করেছে। এর পর থেকে সংস্থার কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে সর্বশেষ গত ১২ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন কমিটির মিটিং হয়। ইতিপূর্বে ১৬ ও ১৭ গ্রেডে থাকা ৪৬ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাদের বেতন গ্রেড পরিবর্তনের জন্য মামলা করলে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ পর্যন্ত মামলার ফলাফল তাদের পক্ষে যায়। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষককে (৬৫ হাজারের ও অধিক) বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ২৯ জন স্টেনোগ্রাফার দাবি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে ফলাফল তাদের পক্ষে আসে।
সরকার পর্যায়ক্রমে আপিল করলে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগও অতিসম্প্রতি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন এবং ১৯৯৭ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে আবেদনকারীদের সব বকেয়া পরিশোধের নির্দেশনা প্রদান করেন। ওই রায়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের মতো ডাক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য অধিদপ্তর ও এর আওতাধীন দপ্তরসমূহের প্রধান সহকারী/সহকারী, উচ্চমান সহকারী পদবির ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা অর্থাৎ সচিবালয়ের মতো প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং স্টেনোগ্রাফার পদবিকে ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকরণসহ বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করে ৩০ বছরের দাপ্তরিক পদবি ও বেতনবৈষম্য নিরসন করার জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আগামীকাল সকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।






