প্রকৃতিতে ‘নভেম্বর রেইন’, ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ৯:১০:৪৯ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : রোববার পুরো নগরটা যেন ছেয়ে গিয়েছিল অনেকটা মেঘের অন্ধকারে! চারদিকের আবহাওয়া দেখে মনে হচ্ছিল এই বুঝি ধেয়ে আসছে কালবৈশাখী। খানিক বাদেই মেঘ ডেকে আকাশ ভেঙে নামে বৃষ্টি।
কিন্তু আকাশ ভেঙে না নামলেও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে ভোররাতে এবং সন্ধ্যা রাতে। তবে সিলেট ছাড়া ঢাকাসহ অন্য অঞ্চলে বৃষ্টির অনেককে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সেসব অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। নভেম্বরে এই বৃষ্টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাসও করতে দেখা গেছে অনেককে। ফেসবুকে পোস্ট করে লিখতে দেখা গেছে- নভেম্বর রেইন।শহরের কারো কারো এই বৃষ্টি নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা গেলেও নভেম্বরের ভারি বৃষ্টিপাত যে ফসলের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে সেটিকে বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবেও দেখছেন কৃষিবিদরা।
তারা বলছেন, এই মৌসুমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হলে সেটি কখনো কখনো ফসলের জন্য উপকারী। কিন্তু এমন ভারি বৃষ্টিপাত কিংবা টানা বৃষ্টি শীতকালীন ফসলসহ কৃষিতে খুব নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী পাঁচ দিনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেছেন, অক্টোবর ও নভেম্বরে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ তৈরি হলে সেগুলো শক্তি অর্জন করে এবং এর প্রভাবে বাংলাদেশ-ভারত কিংবা মিয়ানমার অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে মেঘমালা তৈরি অব্যাহত থাকে। যার ফলে কখনো কখনো হালকা, কখনো ভারি বা কখনো মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়।
এমন অবস্থার মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অফিস টানা পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে- কাল সোমবার বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
মঙ্গলবার- বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।এছাড়া বুধবার খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এরপরই আস্তে আস্তে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে বলেও বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা :
বছরের এই সময়ে সাধারণত আমনের চাষাবাদ হয়ে থাকে। শনিবার বিকেল থেকে কখনো ভারি কখনো হালকা বৃষ্টিপাত চলে একটানা দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।বাংলাদেশে নভেম্বর ও ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারি অর্থাৎ শীতের দিকে ধানসহ শীতকালীন নানা সবজি চাষাবাদ হয়ে থাকে।এই সময় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হলে সেটি সাধারণত ফসলের জন্য খুব একটা ক্ষতির কারণ হয় না বলে মনে করেন কৃষিবিদরা।কৃষিবিদ তালহা জুবায়ের বলেন, যদি এই বৃষ্টিপাত অল্প হতো সেটা জমি কিংবা ফসলের জন্য উপকারী ছিল। কিন্তু শনিবার যে বৃষ্টি হয়েছে সেটা তো ভয়াবহ বৃষ্টি। নভেম্বরে তো এমন বৃষ্টি আমরা সাধারণত দেখি না।
কৃষিবিদরা বলছেন, এই ধরনের ভারি বৃষ্টিপাত হলে অনেক ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে করে যে সব ফসলের মূল মাটির নিচে থাকে সেগুলো বেশিরভাগ সময় নষ্ট হয়ে যায়। আর যদি এই বৃষ্টি একটানা দুই তিন দিন বা আরো সময় ধরে চলতে থাকে তাহলে তা ফসলের জন্য ভীষণ ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এই মৌসুমে সাধারণত মাঠে ধান থাকে। কৃষকদের কেউ কেউ আবার ধান কেটে কেবল মাঠে রেখেছে মাত্র। এমন সময় ভারি কিংবা টানা বৃষ্টি ধানের বড়সড় ক্ষতি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদরা।







