জকিগঞ্জে সুরমার ভাঙনে বিপন্ন জনজীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ৬:৩৫:০২ অপরাহ্ন
এখলাছুর রহমান, জকিগঞ্জ :
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের অন্তর্গত শাহগলী বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে শতশত বাড়িঘর, ফসলিজমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও বাজার নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে বারইগ্রাম এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশকিছু বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। স্থানীয় জনসাধারণ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, অতিদ্রুত মেরামত কাজ সম্পন্ন না হলে অচিরেই ৪/৫ টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এ নিয়ে বারাকুলি, চককোনাগ্রাম, পরচক ও বারইগ্রাম এলাকার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বারাকুলি এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর তীরবর্তী বহু ঘরবাড়ি এখন ভাঙনের মুখে। বিশাল বিশাল ভাঙনে আশপাশের ফসলী জমিও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। গ্রামের অসংখ্য পরিবার বাড়িঘর হারিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকে রাস্তার পাশে বা উঁচু জায়গায় তাঁবু টানিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
বারাকুলি গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের ফসলি জমি ও গাছপালা রাক্ষুসে সুরমা গিলে খেয়েছে। এখন থাকার জায়গাটুকু নিয়েও শঙ্কায় আছি। দিনরাত নদীর গর্জনে ঘুমাতে পারি না।
ভয়াবহ এই ভাঙনের বিষয়ে বারহাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী বলেন, তড়িৎ ব্যবস্থা না নিলে বারাকুলি, চক ও পরচক এলাকার হাজার হাজার মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বে। ভাঙন এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মিফতা আহমেদ বলেন, জেগে জেগে রাতদিন পার করছি। ঘরবাড়ি হারানোর ভয়ে চোখে ঘুম নেই।
জানতে চাইলে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) জসিম উদ্দিন বলেন, আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি। এলাকাটির অবস্থা সত্যিই ভয়াবহ। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
স্থানীয়দের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে ব্লক ফেলে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু না করলে পুরো গ্রাম বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে, ফসলি জমি নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নদী তীরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর মসজিদও এখন হুমকির মুখে রয়েছে।







