সপ্তাহের মধ্যে আবার ভূমিকম্প
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১০:১৩ অপরাহ্ন
আবহাওয়াবিদরা বলছেন ‘আফটার শক’, সিলেটে কম্পন নিয়ে বিভ্রান্তি

জালালাবাদ রিপোর্ট : দুই দিনে চার দফা ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক না কাটতেই ফের ভূমির ঝাঁকুনিতে কাপল বাংলাদেশ। এ কম্পনে কেঁপেছে ঢাকা। তবে সিলেটে কম্পন নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। কেউ বলেছেন, এখানেও হয়েছে। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, তাদের যন্ত্রে রেকর্ড হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর ঘোড়াশালে। এটি ছিল মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প; রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৩ দশমিক ৬ মাত্রার।
গত শুক্র (২১ নভেম্বর) ও পরদিন শনিবার প্রায় ৩১ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশে চারবার ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎস ছিল নরসিংদীর মাধবদী। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। শুক্রবারের ভূমিকম্পে ১১ জন নিহত হয়। আহত হয় ছয়শ’র বেশি মানুষ।
বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে সিলেটে এবং কক্সবাজারের টেকনাফে দুই দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। অর্থা গত শুক্রবার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬ দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হলো।
অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, ২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার যে ভূমিকম্প হয়েছিল, এটা স্মরণকালের মধ্যে দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। ভূপৃষ্ঠে এত তীব্রতা এর আগে আমরা কখনো অনুভব করিনি। স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার নগরবাসী সাংঘাতিক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
গতকালও ঘটনাক্রমে ভূমিকম্পের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে খুবই কাছে নরসিংদীর পলাশে। ছয়টির মধ্যে তিনটি ভূমিকম্পরেই উৎপত্তিস্থল হলো নরসিংদী। এই এলাকা হলো বার্মা প্লেট এবং পশ্চিমেরটি ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থল বা সাবডাকশন জোন। এর এলাকা বিশাল। সিলেটে ও টেকনাফে যে ভূমিকম্প হয়েছে তাও এই সাবডাকশন জোনের অন্তর্ভূক্ত।
তবে সিলেট আবহাওয়া অফিস স্থানীয়ভাবে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার কোনো প্রমাণ পায়নি। সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন বলেন, সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার মতো কোনো ঘটনা তাদের যন্ত্রে রেকর্ড হয়নি। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার মণিপুরের ৩.৫ মাত্রার কম্পন ভারতের সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রকাশ করেছে, তবে এর প্রভাব সিলেট অঞ্চলে অনুভূত হয়নি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার দাবি করছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার লিখছেন রাতে দুবার এবং সকালে একবার কম্পন অনুভূত হয়েছে। কিন্তু সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, স্থানীয় পর্যবেক্ষণ যন্ত্রে এ ধরনের কোনো সিগন্যাল পাওয়া যায়নি এবং মণিপুর অঞ্চলের কম্পনের প্রভাবও সিলেটে পড়েনি।
অন্যদিকে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সূত্র জানিয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিলেটে ৩.৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল গোয়াইনঘাট সীমান্ত এলাকায়। তবে এ সম্পর্কেও সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন নিশ্চিত করে বলেন, এমন কোনো তথ্য তাদের অফিসে রেকর্ড হয়নি।




