বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটাল করার নির্দেশ হাইকোর্টের
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮:৪৩:২৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজেশন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আশিফ হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে রিট শুনানিতে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির রোমেল।
রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, বর্তমান ব্যবস্থায় বিয়ে ও তালাকের তথ্য কার্যকরভাবে যাচাই করা সম্ভব হয় না। এতে পারিবারিক স্থিতি ক্ষুন্ন হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে সন্তানদের বৈধতা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। হাইকোর্ট বেঞ্চ আরও বলেন, কার্যকর ডিজিটাল ডাটাবেস না থাকায় প্রতারণার সুযোগ তৈরি হয়, যা সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে স্বীকৃত মানবিক মর্যাদা ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
আদালত আরও জানান, নিবন্ধন নিয়ে আইন থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটি সমন্বিত ও কার্যকর ডিজিটাল সিস্টেম গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই সব বিয়ে ও তালাকের তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে ডিজিটালি নিবন্ধন করতে হবে বলে নির্দেশনা দেন আদালত। যেন সব তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে, ডাটাবেস সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয়, নাগরিকরা বিশেষ করে নারীরা এসব তথ্য সহজে যাচাই করতে পারেন এবং ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন। এ ছাড়া আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত পারিবারিক নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, আইনি স্বচ্ছতা এবং বিয়েুতালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, আগের বিয়ের তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণে জটিলতা ইত্যাদি সমস্যা কমে আসবে। এটি নাগরিকদের সামাজিক মর্যাদা, ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং সমাজে পারস্পরিক আস্থা পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রাখবে।
এর আগে ২০২১ সালের ৪ মার্চ এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন ও তিনজন ভুক্তভোগী রিটটি করেন। রিটে তারা বলেছিলেন, বর্তমান বিয়ে/তালাক নিবন্ধন ব্যবস্থা পুরোপুরি অ্যানালগ, প্রযুক্তিগত সহায়তা না থাকায় এক এলাকায় নিবন্ধিত বিয়ে সহজেই অন্য এলাকায় গোপন রেখে আরও বিয়ে করা সম্ভব। এরপর ২০২১ সালের ২৩ মার্চ বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ এবং কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইট তৈরি করে তথ্য সংরক্ষণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।





