এ আই’র অপব্যবহার বাড়ছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩০:৫১ অপরাহ্ন
গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকে এআই অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে জালিয়াতি সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে, সরকার এআই ব্যবহার করে জালিয়াতি প্রতিরোধে একটি পৃথক আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসার পর এটি ব্যবহার করে জালিয়াতি ব্যাপক হারে বেড়েছে বলে মনে করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ভিসা নিয়েও জালিয়াতি হচ্ছে। এর ফলে অনেক দেশে বাংলাদেশের নাগরিকেরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে এআই ব্যবহার করে করা জালিয়াতি রোধে জরুরী ভিত্তিতে একটি আইন (অধ্যাদেশ) জারি করবে সরকার। সচেতন মহলের মতে, বাংলাদেশে এআই আসার পর জালিয়াতি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
লক্ষণীয় যে, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এর অপব্যবহারও ক্রমশঃ বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এআই ব্যাবহার করে জাল ছবি তৈরী এবং তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। যা প্রতারণা ও ভুয়া তথ্য ছড়াতে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতারকরা এআই ব্যবহার করে কণ্ঠ ও চেহারা নকল করছে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে এটা ঘটছে। মুনলক-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এআই ব্যবহার করে প্রতারণা ২০২৫ সালে ১৪৮ শতাংশ বেড়েছে। এটি একটি উদ্বেগজনক বিষয়। সরকারী কর্তৃপক্ষ ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভয়েস ক্লোনিং এখন সহজেই করা যায়। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগৃহীত অডিও ক্লিপ ব্যবহার করে এআই কণ্ঠ নকল করে। কয়েক সেকেন্ডের অডিওই নকলের জন্য যথেষ্ট। ডিপসেক, ভিডিও কল এখন বাস্তব হুমকি। প্রতারকরা নকল সিইও বা ম্যানেজারের ভিডিও তৈরী করে। তারা ভিডিও মিটিংয়ে টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয় এই কল ব্যবহার করে।
সম্প্রতি মিডিয়ায় ‘নির্বাচনে এআই প্রযুক্তির ঝুঁকি’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনেক উপকারিতা থাকলেও বাংলাদেশের জন্য তা ভয়াবহ অভিশাপ হয়ে আসছে। আগামীতে প্রযুক্তির এই ভার্সনের কুফল মোকাবিলা করতে বাংলাদেশকে হিমশিম খেতে হবে। বিভিন্ন অঞ্চলে বা গোটা দেশে অস্থিতিশীলতা ও সংঘাত, সহিংসতা এমনকি গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এআইয়ের কারণে। এই আশংকায় খুব সাধারণ একটা কারণ হলো, অনিয়ন্ত্রিত যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর সমাজের একটি অংশ খুব বেশী আসক্ত। এই আসক্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সত্যমিথ্যা যাচাই বাছাই করার মতো বিবেক বিবেচনা নেই। মিথ্যা, আংশিক বক্তব্য, অসম্পূর্ণ তথ্য ও মতামত অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে এই নতুন প্রযুক্তির অপব্যবহার করে। এভাবে একজনের চেহারার সঙ্গে অন্য কারো চেহারা মিলিয়ে আপত্তিকর ভিডিও, রাজনৈতিক বক্তব্য, ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় প্রচার করতে পারে স্বার্থান্বেষী মহল।
আগামী নির্বাচনে এ ধরনের তৎপরতার আশংকা বাড়তে পারে। গুজবের গজবে বিভ্রান্ত হতে পারেন ভোটার এমনকি ভোটপ্রার্থীরাও। সর্বোপরি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অনেক পিছিয়ে। এ কারণে সাধারণ মানুষও অনেক প্রযুক্তি সম্পর্কে অজ্ঞ। যা দেখে তা অনেকেই সহজে বিশ্বাস করে ফেলে। এ অবস্থায় সরকারকে এআইনের অপব্যবহার প্রতিরোধে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এমন অভিমত সচেতন মহলের।



