মোবাইলের ম্যাসেজ বিড়ম্বনা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ৭:৪৪:০২ অপরাহ্ন
আব্দুল্লাহ আলম নুর
বর্তমানে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মোবাইলফোন। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সবার হাতেই দেখা যায় সহজে বহনযোগ্য এই যন্ত্রটি। কিন্তু এর বিড়ম্বনারও যেন শেষ নেই। মোবাইল অপারেটরগুলোর বার্তা, আর সময়-অসময়ের কল দেখে মনে হয়, তারা যেন এর প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। অফার, গান, খ্যাত-অখ্যাত তারকার সাথে আড্ডা আরো কত কি!
‘আপনাকে কে ভালোবাসে জানতে চান? ডায়াল করুন… নম্বরে’। বিগত কয়েকদিনে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার এসেছিলো, উল্লিখিত বার্তাটি। এছাড়া প্রতিদিন দুর্দান্ত অফার, সেরা অফার, ধামাকা অফার, অমুকের সাথে আড্ডা, কলার রিংটোন, গুণগুণ সেট করাসহ নানাধরণের বার্তা এসে থাকে মুঠোফোনে। যেন খুব নিয়ম করেই বার্তা পাঠায় তারা। কিন্তু এসব বার্তার ফলে অনেক সময় ব্যবহারকারীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বার্তা চাপা পড়ে যায়। তাছাড়া বারবার আসতে থাকা এসব বার্তা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এর ব্যবহারকারীর জন্য।
অন্যদিকে আরো বিরক্তির কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে, দিন-রাতের বিভিন্ন সময়ে মুঠোফোনে সরাসরি কল করার বিষয়টি। কল করে বিভিন্ন অফারের কথা জানানো, অমুক-তমুক খ্যাত-অখ্যাত সেলিব্রিটির সাথে আড্ডার নিমন্ত্রণ, গান শোনার বা বিভিন্ন গান সেট করার কথা জানানো এসব রীতিমতো বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে ব্যবহারকারীদের নিকট। দেখা যায়, কোনো নির্দিষ্ট সময় না দেখে, দিন-রাতের বিভিন্ন সময় এসব ফোনকল দিয়ে থাকে। অথচ তারা এটাও জানে না, নাম্বারটি ওই সময় কার নিকট থাকছে, তিনি আদৌ কোন বয়সী বা কীরকম মানসিকতা সম্পন্ন।
ঢালাওভাবে যাকে-তাকে যেকোনো বার্তা পাঠানো বা কল করা অনেককেই বিব্রত করতে পারে। তাছাড়া যখন-তখন মুঠোফোনে সরাসরি কল করে, গান শোনার বা চটকদার কথা শোনার জন্য ব্যক্তির মানসিক অবস্থাও সবসময় এক রকম থাকে না। এসব হুটহাট কলে অনেক ব্যবহারকারী বিরক্ত হয়ে কল কেটে দেয় কিংবা নাম্বার দেখেই কল রিসিভ না করতেও দেখা যায়। কিন্তু অপারেটরগুলো যেন নাছোড়বান্দা, কল তারা করবেই, চলতি অফার তারা শোনাবেই। ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কোনো কল করে শুরুতেই বলছে, ‘দয়াকরে কলটি কাটবেন না…’। তারপর শুরু করে বিস্তারিত।
প্রকৃতপক্ষে মানুষ সবসময় সব অবস্থার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে না। এসব বার্তা, কলও ব্যবহারকারীর মানসিক বিরক্তিকর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অপারেটরগুলো এমনিতে ভালো অফার দিয়ে থাকে। এছাড়া নির্দিষ্ট কোড কিংবা অ্যাপসের মাধমেও বিভিন্ন প্যাকেজ অফার সম্পর্কে ব্যবহারকারী জানতে পারছে এবং পছন্দমতো বেছে নিতে পারছে। আর কোনো গান সেট করতে আগ্রহী হলে, ব্যবহারকারী নিজেই খোঁজ নিয়ে কোড প্রেরণ করে তা সেট করতে পারেন। সেজন্য কল করে আবার সে গান শোনানোয় খুব বেশি ব্যবহারকারী আকৃষ্ট হয় বলে মনে হয় না। কারণ জনপ্রিয়তা পাওয়া গান সমাজিক মাধ্যম, ইউটিউবে আগেই দেখে নেয় তারা।
তাছাড়া অপারেটরগুলোর আরেকটি বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন বলে মনেকরি, তা হলো, বাংলা বার্তার ক্ষেত্রে শুদ্ধ বানানের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা এবং ভাষার বিকৃত উচ্চারণ যেন না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখা।
লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।