তেলিহাওর সিলিং ফ্যানে নারী ব্যাডমিন্টন প্লেয়ারের লাশ, স্বামী আটক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৭:৪৯:০৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে ফ্ল্যাটের এক কক্ষে মিললো সাবেক নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়ের মরদেহ। শনিবার দুপুর ২টায় নগরের তেলিহাওর সিলভ্যালী টাওয়ারের তৃতীয় তলার এ-২ ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুঁলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ফারাজানা হক মিলি (২৫) ওই বাসার বাসিন্দা নুর আলমের স্ত্রী ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। মিলি জেলা পর্যায়ের সাবেক নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শনিবার ভোররাতের দিকে মিলির মৃত্যু হয়েছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।
মিলি আত্মহত্যা করেছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুঁলানো মরদেহের হাঁটু বিছানায় লাগানো ছিলো। তাতে যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক রয়েছে। পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর মরদেহ ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মিলি অন্তঃসত্ত¡া ছিলেন কিনা, তাও জানার চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, প্রায় ২ বছর আগে জগন্নাথপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সিরাজুল হকের মেয়ে ফারজানা মিলির সঙ্গে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলিয়ার কাপন গ্রামের আসকর আলীর ছেলে নুর আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সিলভ্যালী টাওয়ারের ডা. মোছা মরিয়ম সিদ্দিকীর মালিকানা ফ্লাটে ভাড়া থাকতেন এ দম্পতি।
পরিবারের লোকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে মিলির সঙ্গে ঝগড়া হয় স্বামীর। ঝগড়ার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে বাসার একটি কক্ষে প্রবেশ করে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন মিলি। এ দুইদিন তিনি না খেয়ে থাকলেও স্বামীসহ বাসার লোকজন তার কোনো খোঁজ খবর নেয়নি।
নিহতের ভাই আমিনুল হক সিপনের অভিযোগ, মিলিকে নির্যাতন করে খুন করা হয়েছে। মিলির স্বামী নুর আলম তার স্ত্রীর ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ৬ লাখ টাকা তুলে অনলাইনে জুয়া খেলেছেন। সেই সঙ্গে মিলির ব্যবহৃত স্বর্ণ দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে জুয়া খেলেছেন। এসব বিষয় নিয়ে তার বোনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জের থেকে মারধর করা হয়। এরই জের ধরে হত্যাকাÐ ঘটতে পারে দাবি করেন তিনি। সকালে খবর পেয়ে এখানে এসেছে বোনের লাশ দেখেছেন। পরিবারের সাথে পরামর্শ করে মামলা করবেন কি-না সেটি পরে সিদ্ধান্ত নিবেন।
অভিযোগের বিষয়ে নিহতের স্বামী নুর আলম বলেন, আমাদের প্রায়ই ঝগড়া হতো। সে খুব রাগি ছিলো। কখনো রাগ করে ২/৩ দিন ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে থাকতো। বৃহস্পতিবার রাতেও ঠিক একইভাবে রাগ করে দরজা বন্ধ করে থাকে মিলি। জুয়া নয় পেশা হিসেবে অনলাইনে ডলার কেনা-বেচা করতেন জানিয়ে তিনি বলেন, স্ত্রীর কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। বাড়ির জমি বিক্রি করে বিনিয়োগ করেছি। মিলির ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা উঠাইনি।