সিলেটে ভাবী হত্যায় দেবরের যাবজ্জীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:২৪:২৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে ভাবীকে গলা কেটে হত্যার দায়েরকৃত মামলার এক যুগ পর দেবরের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের ঘোষণা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়।
বুধবার বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শায়লা শারমিন এ রায় ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দন্ড প্রাপ্ত আসামীর সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বৈরাগীবাজার এলাকার আরিজ খাঁ টিলার মো: মইন উদ্দিনের ছেলে মো: কিবরিয়া (৪৫)। রায় ঘোষণার সময় দন্ড প্রাপ্ত আসামী কিবরিয়া আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এডিশনাল পিপি এডভোকেট দিয়া ইয়াসমিন ও সহকারী এপিপি এডভোকেট মো: আব্দুস সাত্তার এবং আসামীপক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান মামলাটি পরিচালনা করেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামী কিবরিয়ার ভাই কুতুব উদ্দিনের সাথে ঘটনার প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ানীবাজারের বৈরাগীবাজার এলাকার খশির ভেউলপাড়ের মৃত ইমাম উদ্দিনের মেয়ে খালেদা আক্তারের (২২) বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ২০০৮ সালের প্রথম দিকে কুতুব উদ্দিন সৌদি আরব চলে যান। এরপর খালেদার সংসার চালানোর জন্য কুতুব উদ্দিন ভাই কিবরিয়ার কাছে টাকা-পয়সা পাঠাতেন। নামে মাত্র টাকা খালেদাকে খরচের জন্য দিতেন কিবরিয়া, যা দিয়ে খালেদার সংসারের খরচ চলতো না। ফলে দেবরের সাথে খালেদার বিভিন্ন সময় ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো।
২০০৯ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারী রাতে এ নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়। বৈঠকে কিবরিয়া খালেদার পা ধরে মাফ চেয়ে ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে না বলে অঙ্গীকার করে। ১৫ ফেব্রুয়ারী কুতুব উদ্দিন ৯ হাজার টাকা বিদেশ থেকে খালেদার কাছে পাঠান। এ টাকাকে কেন্দ্র করে ওইদিন রাত ৯টার দিকে কিবরিয়া খালেদাকে ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে ঘরের লাশ ফেলে রাখে। পরদিন পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খালেদার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই জাবের আহমদ বাদি হয়ে মো: কিবরিয়া (২২), তার মা আছারুন বিবি (৫৫), মছব্বির আরীর ছেলে নূর বকস্ (৪০), তার ভাই পাখি মিয়াকে (৩৫) আসামী করে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ মে বিয়ানীবাজার থানার এসআই মো: মজিবুর রহমান কিবরিয়া ও তার মা আছারুন বিবিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন এবং ২০১০ সালের ২৯ জুলাই থেকে এ মামলার বিচারকার্য শুরু করেন আদালত। মামলা চলাকালীন সময়ে চার্জশিটভূক্ত আসামী আছারুন বিবি মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী মো: কিবরিয়াকে পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ প্রদান করেন।