মীরাবাজারে পতিতাবৃত্তি, জড়িত পুলিশ সদস্য
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ৯:২৪:৫২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নগরীর মীরাবাজার আগপাড়ার একটি বাসায় অসামাজিক কার্যকলাপ চলছিলো। বিভিন্ন স্থান থেকে তরুণী-যুবতীদের নিয়ে এসে ওই বাসায় চলতো পতিতাবৃত্তি। আর এই অনৈতিক কাজের সঙ্গে এক পুলিশ সদস্য জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ওই পুলিশ সদস্যকে স্থানীয়রা গণপিটুনি দিয়েছে। তিনি বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে গ্রেফতার অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম শেখ বেলাল হোসেন সাগর (২৮)। তিনি শিল্পাঞ্চল পুলিশের সিলেট ইউনিটে কনস্টেবল পদে কর্মরত। এ সব তথ্য পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অনৈতিক কাজে শিল্পাঞ্চল পুলিশ সদস্যের জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৮ (সিলেট)-এর পুলিশ সুপার মো. রওশনুজ্জামান সিদ্দিকীর অফিসিয়াল মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, মীরাবাজার আগপাড়া মৌসুমী আবাসিক এলাকার ৮৫/বি নং বাসার মালিক দুদু মিয়া প্রবাসে থাকেন। বাসাটি দেখভাল করেন কিশোরগঞ্জের এক ব্যক্তি। এ বাসার চতুর্থ তলার ইউনিটটি এক মাস আগে সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া বেগম ভাড়া নেন। এরপর থেকে দিনে-রাতে পুরুষদের আনাগোনা শুরু হয়। চলতো অসামাজিক কার্যকলাপ। আর এই অনৈতিক কাজে রাবেয়াকে শেল্টার দিতেন পুলিশ সদস্য বেলাল হোসেন সাগর। বিনিময়ে মোটা অংকের টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেতেন।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তরুণী-যুবতীদের নিয়ে এসে পতিতাবৃত্তি করাতেন রাবেয়া বেগম। মূলত রাবেয়ার কোনো স্বামী নেই। নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।
গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রাবেয়ার ঘরে হঠাৎ কয়েকজন যুবক জোরপূর্বক ঢুকতে চান। এ সময় ঘরে অবস্থান করা যুবতী সুলতানা বেগমসহ কয়েকজন ‘ডাকাত- ডাকাত’ বলে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন এসে যুবকদের কয়েকজনকে আটক করেন। তবে এর আগেই ৪-৫ জন যুবক পালিয়ে যায়। আটককৃতদের মধ্যে ১ জন পুলিশ সদস্য সাগর। রাত সাড়ে ৯টায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এ সময় স্থানীয়রা এই বাসায় দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে বলে অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে এ বাসার বিভিন্ন কক্ষ থেকে অসামাজিক কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র জব্দ করে পুলিশ। ওই বাসা থেকে ৩ নারী ও ২ যুবককে আটক করে।
তারা হলেন, সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৩১), তার ছেলে মুন্না আহমদ (১৮), সিলেটের ওসমানীনগর থানার কাশিকাপন গ্রামের মো. আব্দুল মতিন তালুকদারের ছেলে মাসুদ আহমদ তালুকদার, জৈন্তাপুর উপজেলার ফেরিঘাট গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে সুলতানা বেগম (২৪), নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বেপারিবাড়ি গ্রামের মো. আজিজুল হকের মেয়ে প্রিয়ামনি (১৮) ও স্থানীয়দের মারধরে আহত ওই পুলিশ সদস্য শেখ বেলাল হোসেন সাগর।
এ ঘটনায় রাবেয়া বেগমকে আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। পরে বুধবার বিকালে তাদের আদালতে হাজির করলে বিচার জেলহাজতে প্রেরণ করেন। বৃহস্পতিবার আসামীদের ৩ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। আগামী রোববার সেই আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ তথ্যটি জানান কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।