ছাত্রলীগের হাতে সাবেক নেতা এপিপি পূজন গুলিবিদ্ধ, তদন্ত কমিটি
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০২৩, ৭:৩৩:৫৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা প্রবাল চৌধুরী পূজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ও চিনি চোরাচালান নিয়ে ফেসবুকের পোস্টকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাতে নগরের দাড়িয়াপাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত প্রবাল চৌধুরী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য। বর্তমানে তিনি সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতের এপিপি হিসেবে কর্মরত। আহত প্রবাল চৌধুরী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন জানান, রাত ৮টার দিকে নগরের দাড়িয়াপাড়া এলাকায় ২/৩ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী গিয়ে দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে। পরে দাড়িয়াপাড়া এলাকার নার্সারির সামনে প্রবাল চৌধুরী পূজনকে পেয়ে তার সাথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পূজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণের শব্দ শুনা যায়।
এ ব্যাপারে এপিপি প্রবাল চৌধুরী পূজন দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তাদের তিনজনের মাথায় ছিল হেলমেট ও হাতে ‘দা’ ছিল। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, রাত সোয়া ৮টার দিকে দাড়িয়াপাড়ার নার্সারির সামনে দু’জন ছোট ভাইকে নিয়ে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় রাহেল, নাজমুল ও নাইম গিয়ে আমাকে গালিগালাজ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে কয়েক শ লোক ছিল। একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটি হলে হেলমেট পরিহিত এক যুবক আমাকে উদ্দেশ্যে করে এক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। আমি দ্রæত ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। গুলিতে পায়ে স্পিন্টার লাগে বলে তিনি দাবি করেন।
ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে কোনো পূর্ববিরোধ নেই উল্লেখ করে প্রবাল চৌধুরী বলেন, ৩১ জুলাই জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে সমালোচনা করে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অনুরোধে তিনি পোস্টটি মুছে দেন। সম্প্রতি ভারত সীমান্ত দিয়ে চিনি চোরাকারবারের সঙ্গে সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন জড়িত থাকার কথা ফেসবুকে লেখার জেরে হামলা হয়েছে। হামলার ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ আছে উল্লেখ করে তিনি এ ঘটনায় মামলা করবেন বলে জানান।
এদিকে হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতারা। তাদের দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, তারা হামলার ঘটনাটি জানেন না। কেউ তাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ করে থাকলে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি : এদিকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা প্রবাল চৌধুরী পূজনের ওপর হামলার ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সাদি মোহাম্মদ আকাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটির সদস্যরা হলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, বরিকুল ইসলাম বাধন, মাইনুল হাওলাদার ও আইন সম্পাদক মো: তাওহীদ বনি। তাদেরকে দ্রæততম সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দপ্তর সেলে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।