শিক্ষা সফর নিয়ে দ্বন্দ্ব : গভীর রাতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮:১৪:২২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষাসফরকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি ও অন্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, প্রশাসনিক ভবনের সামনে এবং সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরের আয়োজন করেন। এর ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ওই বর্ষের দু’জন ছাত্র প্রতিনিধি। শিক্ষাসফর নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি হয়। একটি পক্ষ বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে গাড়িতে সাউন্ড সিস্টেম চাচ্ছিল, আর অন্যপক্ষ সফরের জন্য টি-শার্ট বানাতে চাচ্ছিল। এ নিয়ে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের বাইরে দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে দুই পক্ষই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভাবনের সামনে গিয়ে ফের বাকবিতণ্ডায় জড়ায়।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হোসেনসহ ছাত্রলীগের আরো কয়েক নেতা-কর্মী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় বাকবিতণ্ডায় জড়ানো শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বলয়ে দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠি নিয়ে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মনিরুল ইসলাম, সহকারী প্রক্টর পার্থ প্রতিম বর্মন, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা আফরাদ তারেক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় প্রক্টরসহ অন্য কর্মকর্তাদের সামনেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে রাত দেড়টার দিকে প্রক্টরসহ অন্য কর্মকর্তারা একটি পক্ষকে বুঝিয়ে হলে ফেরত পাঠান। অপর পক্ষের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মীরা কিছু সময় পর হলে ফিরে গেলে আগে থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে হলে অবস্থান করা ছাত্রলীগের অন্য পক্ষ তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, সহকারী পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তর) উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং রাত ৩টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ও ৩ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ জড়িত নয় দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে বিরোধের খবর পেয়ে তারা সিনিয়র ছাত্র হিসেবে ঘটনা মীমাংসা করতে গিয়েছিলাম। এ সময় শিক্ষকদের উপস্থিতিতে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে হলের মধ্যে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মনিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাসফর আয়োজন নিয়ে প্রথম বর্ষের সাধারণ ছাত্ররা বিভক্ত হয়ে বাকবিতণ্ডা থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন সামান্য আহত হয়েছেন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।