সিলেটে স্ত্রী-দুই সন্তান কুপিয়ে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ৮:৪০:৫৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে স্ত্রী-দুই সন্তান হত্যার দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আসামিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হিফজুর রহমান (৩৬) সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিন্নাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণাকালে তিনি এজলাসে
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নিজাম উদ্দিন তিনি বলেন, আলোচিত হত্যা মামলায় মোট ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডে পাশাপাশি পৃথক তিনটি হত্যার ঘটনায় আসামি হিফজুর রহমানকে ১০ হাজার করে মোট ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৬ জুন হিফজুর রহমান নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত স্ত্রী আলেমা বেগম, ছেলে মিজান (১১) ও মেয়ে আনিছাকে (৫) ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ হত্যার ঘটনায় আলেমা বেগমের বাবা আইয়ুব আলী অজ্ঞাতনামা আসামি করে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ হিফজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথমে আটক করে। এসময় জিজ্ঞাসাবাদে হিফজুর নিজেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন। পরবর্তী সময় আদালতেও হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। মামলার তদন্তের পর গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক হিফজুর রহমানকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ৭ জুলাই সিলেট দায়রা জজ আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে হিফজুর বলেছিলেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন। ঘটনার দিন তিনি স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে স্বপ্নে দেখতে পান স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে বড় বড় মাছ ও সাপ খেয়ে ফেলছে। এ সময় ঘরে থাকা বঁটি নিয়ে অন্ধকারের মধ্যে তাদের বাঁচানোর জন্য এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন। পরে ঘরের বাতি জ্বালিয়ে দেখতে পান স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছেন, হিফজুর রহমান আদালতে ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেটি ইচ্ছাকৃতভাবে আংশিক অসত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তিনি নিজেকে মানসিকভাবে অসুস্থ দাবি করেননি।