সিলেটে মাদক মামলায় ভারতীয় নাগরিকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ৮:৫৯:৪০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে মাদক মামলায় ভারতীয় নাগরিকসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা সুলতানপুর গ্রামের মৃত আফতাব আলীর ছেলে আব্দুস শহীদ, বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের কালিজুরি গ্রামের মৃত মুহিবুর রহমানের ছেলে সায়েক মিয়া (৪০) ও ভারতের ত্রিপুরা জেলার পশ্চিম থানার জয়পুর এলাকার মোহন বর্মণের ছেলে কৃষ্ণ বর্মণ (৩৩)।
এদের মধ্যে শহীদ জকিগঞ্জ থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় দণ্ডিত হন। এ মামলার অপর দুই আসামি নজরুল ইসলাম ও সাহেদুজ্জামানকে খালাস দিয়েছেন আদালত। অপর দুজন সায়েক মিয়া ও কৃষ্ণ বর্মণ ওসমানীনগর থানার একটি মাদক মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের পরিত্যাক্ত মিলঘরে অভিযান চালিয়ে আব্দুস শহীদকে আটক করে পুলিশ। এসময় তাকে তল্লাশি করে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। এসময় তার সঙ্গে থাকা নজরুল ইসলাম ও সাহেদুজ্জামান পালিয়ে যান। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিনুর রহমান। ২০২২ সালের ১২ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শেষে বুধবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
অপরদিকে, ওই বছরের ২৮ জুলাই ভারত থেকে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে মিথাইল অ্যামফেটামিন মিশ্রিত ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে সিলেটে আসছিলেন আসামি সায়েক মিয়া ও কৃষ্ণ বর্মণ। ওইদিন সন্ধ্যায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের একটি দল ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে স্বাদ মিষ্টি দোকান থেকে তাদের আটক করেন। এ সময় সায়েক মিয়ার কাছ থেকে চার হাজার পিস মিথাইল অ্যামফেটামিন মিশ্রিত ইয়াবা ট্যাবলেট, ভারতীয় ৫০০ টাকার ৪টি নোট ও মোবাইল সেট জব্দ করা হয়। আর কৃষ্ণ বর্মণের কাছ থেকে ছয় হাজার পিস মিথাইল অ্যামফেটামিন মিশ্রিত ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক অমর কুমার সেন বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাকন রায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ বছরের গত ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ১৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। বুধবার আদালতের বিচারক সায়েক মিয়া ও কৃষ্ণ বর্মণকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।