সুনামগঞ্জে বেশী দামে সার বিক্রি, বিপাকে কৃষকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৬:৩৫:৫৫ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে বোরো আবাদের সময় সারের চাহিদা বেশি থাকে। আর এ চাহিদাকে পুঁজি করে সার বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন। এবারও চড়া দামে সার বেচাকেনা করায় বিপাকে পড়েছেন কৃষককূল।শাল্লা ও জামালগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫০ কেজির বস্তা ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দামে বাধ্য হয়ে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাব ডিলাররা দাম বাড়াচ্ছে বলে দাবি করেছেন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জে এবার দুই লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ টন। টাকার অংকে এই ধানের মূল্য পাঁচ হাজার একশ দশ কোটি টাকা। বোরো ধানে সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় মাঘ মাসের শুরু (জানুয়ারি’র মাঝামাঝি সময় থেকেই) থেকেই। উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য চাহিদামত সার সরবরাহও নিশ্চিত করা হয়েছে দাবি করেছে কৃষি বিভাগ। জানুয়ারি মাসে জেলায় আট হাজার ৯৩৬ টন ইউরিয়া, এক হাজার তিনশ পঁচাশি টন টিএসপি, এক হাজার ৫০০ টন এমওপি ও তিন হাজার ৬৪ টন ডিএপি সার এসেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ইউরিয়া পাঁচ হাজার ১০ টন, টিএসপি চারশ ৫৯ টন, এমওপি চারশ ২৮ টন ও ডিএপি সাতশ দুই টন। চাহিদা মিটিয়ে কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী জেলায় দুই হাজার ৫০০ টন ইউরিয়া এবং আটশ থেকে এক হাজার টন অন্যান্য সার মজুদ আছে।
কিন্তু জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় কিছু সার বিক্রেতারা বলছে সার আসছে না, নৌকা আসে নি। পর্যাপ্ত সার নেই। এসব কথা বলে বস্তা প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দরে সার বিক্রয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। কৃষকরা বলেছেন, সার বিক্রেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে কোন কথাই বলা যায় না। চড়া দামে বিক্রয় করা হচ্ছে সার।জামালগঞ্জের প-ুব বাজারে ৫০ কেজির সারের বস্তা গেল তিনদিন ১৪০০ টাকায় বিক্রয় করা হয়েছে। ডিলার পয়েন্ট থেকেই ১৩৫০ টাকার সার ১৪০০ টাকায় বিক্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওখানকার হরিনাকান্দি গ্রামের কৃষকরা। এছাড়া ১০৫০ টাকা দামের ডিএপি ১২০০ টাকায় কিনেছেন বলেও দাবি করেছেন কৃষকরা।
শাল্লার নাইন্দা গ্রামের কৃষক প্রমুদ দাস বললেন, শাল্লা সদর, আনন্দপুর, শাসখাই ও প্রতাপপুর বাজারে ইউরিয়া সার এখন ১৪২০ থেকে ১৪৫০ টাকা বস্তার নীচে কেউই বিক্রয় করছে না। এখানকার বিক্রেতাদের বেশিরভাগই সাব ডিলার। তিনি জানালেন, এমওপি সার অনেক কৃষক কিনেছেন ৫০ কেজির বস্তা ১১২০ টাকায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন, সারের সরবরাহের কোন কমতি নেই। কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি বা এ ধরণের প্রচার করার অপচেষ্টা করলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সার অতিরিক্ত দামে বিক্রয়েরও কোন সুযোগ নেই। ডিলার পয়েন্টে লাল সালু টাঙানো হয়েছে। লাল সালু যেখানে টাঙানো সেখানে কোন কৃষক যাবার পর দাম বেশি চাইলে, ওই ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী কৃষি বিভাগের কর্মীদের এই বিষয়ে এই সময়ে আরও বেশি সতর্ক করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।