পুরো স্কুলে একজন শিক্ষক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৯:৪৩:১২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের একটি স্কুল মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে ২১৫ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য শিক্ষক আছেন মাত্র একজন। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির অনুমোদিত পাঁচজন শিক্ষকের পদ কখনও পূরণ হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ২০১৫ সাল থেকে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ছাত্রছাত্রী ২১৫।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সানজু মিয়া বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে অবহিত করলে পার্শ্ববর্তী তরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সেতারা বেগমকে গত ১ জানুয়ারি মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেতারা বেগমকে ওই বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি সপ্তাহে এক থেকে দু’দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন। এমন অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একাই চালিয়ে যাচ্ছেন ৬টি শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক সেলিম আহমেদ জানান, মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ে অবস্থিত হওয়ার কারণে পর্যটক হিসেবে অনেক সরকারি কর্মকর্তা আসেন, বেড়িয়ে যান, সে সময় তাদের কেউ কেউ বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। কী পরিদর্শন করেন তারাই জানেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকটের বিষয়টি কারও দ্বারা সমাধান হয় না।
শিক্ষক-অভিভাবক সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন জানান, হাওরবাসী এমনিতেই অবহেলিত। তারপর বিদ্যালয়ে অনুমোদিত পাঁচটি পদ রয়েছে। কখনোই এই পাঁচজন শিক্ষকের পদ পূরণ হয়নি। ১ জানুয়ারি পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রেষণে একজন শিক্ষক দেওয়া হলেও তিনি সপ্তাহে এক-দু’দিন উপস্থিত থাকেন।
সহকারী শিক্ষিকা সেতারা বেগম জানান, নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁর দুই সন্তান অসুস্থ হওয়ায় সম্প্রতি যেতে পারেননি। তা ছাড়া তিনি নিজেও অনেক সময় অসুস্থ থাকায় বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না।বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সানজু মিয়া জানান, ২১৫ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান খুবই কষ্টকর কাজ। পাঠদান দূরের কথা, তাদের সামাল দেওয়াই তো অসম্ভব। শিক্ষা অফিস প্রেষণে একজন শিক্ষিকা দিয়েছেন, তিনিও গরহাজির থাকেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল খায়ের জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে পোস্টিং দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে সমস্যার কিছুটা সমাধান করা যেত। এ অবস্থায় আগামী মাসে সহকারী শিক্ষিকা সেতারা বেগমকে পরিবর্তন করে নতুন একজন শিক্ষক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।