হকার্স মার্কেটে ক্রেতা বাড়াতে নানান উদ্যোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২০:৪৫ অপরাহ্ন
মুনশী ইকবাল :
এক সময়ের নোংরা আবর্জনা আর দুর্গন্ধময় লালদীঘি হকার্স মার্কেট এখন অনেক পণ্য আর বিক্রেতার সমাহার নিয়ে এক বিশাল মার্কেট। যেখানে নিম্ন থেকে মধ্যবিত্তরা নির্বিঘ্নে তাদের বাজার সদাই করতে পারবেন। রাস্তা আর ফুটপাত দখল করে কেনাবেচা বন্ধ করতে নগর প্রশাসন এই উদ্যোগ নেয়।
নগরীর বান্দরবাজারের নগর ভবন এবং কুদরত উল্লাহ মসজিদ মার্কেটের পেছনে এর অবস্থান। সম্প্রতি এখানে যাতায়াতের আরও সুবিধার জন্য কুদরত উল্লাহ মার্কেট ও সিটি মার্কেট কর্তৃপক্ষ তাদের একাধিক দোকানকোঠা ভেঙে বড়ো রাস্তা করে দিয়েছেন। এরআগে নগর কর্তৃপক্ষ সিটি মার্কেটের মূল রাস্তার আশপাশের যেসব দোকান রাস্তা দখল করেছিল সেগুলো উচ্ছেদ করে। এতে হকার্স মার্কেটে আসার আগের ছোটো রাস্তাও এখন আরও বড়ো হয়েছে। ফলে আগে যেভাবে ঘুরে লোকজনকে হকার্স মার্কেটে যেতে হতো এখন আর তা করতে হবে না। তারা সহজেই সরাসরি এই বাজারে চলে যেতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা বলেন হকারদের রাস্তা থেকে তুলে এখানে বিশাল জায়গা জুড়ে ব্যবসা করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাটে-ফুটপাতে বিশৃঙ্খলভাবে ব্যবসা করার চেয়ে এখানে ব্যবসা খুব সুন্দর ও ছিমছাম। রাস্তায় এসব দোকান থেকে বাজার করতে ক্রেতাদের খুব কষ্ট করতে হয়। একদিকে রাস্তা-ফুটপাত বন্ধ করে ব্যবসা করায় সব সময় চিৎকার-চেঁচামেচি লেগে থাকে, এ-র উপর মানুষ ও যানবাহনে ধাক্কাধাক্কিতে শান্তি মতো বাজার করা যায় না। এরচেয়ে মাঠে এই হকার্স মার্কেটে সাজানো দোকান থেকে অনেক সহজে সুলভ মূল্যে মাছ-তরিতরকারি, শীতের কাপড়, গার্মেন্টস পণ্য ইত্যাদি কিনা যাবে। এত সুন্দর পরিবেশ থাকতে রাস্তায় ফুটপাতে কেন এত ঠেলা ধাক্কা করে বাজার করতে হবে, বিক্রি করতে হবে প্রশ্ন বাজার করতে আসা অনেকের।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দেখা যায় পুরো মাঠ জুড়ে বিক্রেতারা দোকান সাজাচ্ছেন। তারা জানান সকাল থেকেই বাজার খোলা থাকলেও বিকেলে অফিস আওয়ারের পর ক্রেতার সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাই বিক্রিতারাও বেশিরভাগ দুপুরের পর এসে দোকান খুলেন। বিকেল থেকে ব্যবসা জমা শুরু হলেও মূল ব্যবসা সন্ধ্যার পর জমে উঠে। তারা জানান রাস্তা ও ফুটপাতে দৌড়ঝাঁপ দিয়ে ব্যবসা করার চেয়ে এখানে এক জায়গায় বসে বিক্রি অনেক ভালো। তবে অনেকেই সুবিধাজনক দিক জানেন না বিধায় ক্রেতা সন্তোষজনক নয়।
বিক্রেতারা বলেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট সহায়তার করা হচ্ছে। কয়েকদিন থেকে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে, ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া দেওয়া হয়েছে। এসময় অনেক ক্রেতা প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষে এসব উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তারা কুদরত উল্লাহ মার্কেট কর্তৃপক্ষের প্রতি দোকান ভেঙে রাস্তা করে দেওয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এসময় তারা রাস্তা ও ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদে জিরো টলারেন্স নীতিতে কঠোর হতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। তারা বলেন পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ মানবতা বিবর্জিত। তবে যেহেতু নগর কর্তৃপক্ষ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে তাই যারা এরপরও রাস্তা দখল করছে তারা অপরাধ করছে। তাই নাটের গুরুসহ এদের টেনে ধরতে হবে। একটি সুন্দর-সুশৃঙ্খল সিলেট নগরী গড়তে প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষ সব সময় নগরবাসীকে পাশে পাবে। প্রয়োজনে নগরবাসীকে সাথে নিয়ে রাস্তা ও ফুটপাত থেকে সমূলে হকার উচ্ছেদ করতে হবে।