দিরাইয়ে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ ১২, আহত ২৫
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:০৯:২৯ অপরাহ্ন
দিরাই প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে ১২ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল চারটায় দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের রাড়ইল গ্রামে সুমন বাহিনী ও তায়েফ বাহিনীর মধ্যে এ ঘটনাটি ঘটে। বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ ১২ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, দিরাই উপজেলার রাড়ইল গ্রামে আনু মিয়া চৌধুরী ও জসীম উদ্দিন চৌধুরীর লোকের সাথে গ্রামের আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে একাধিকবার বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দু’পক্ষে ডজনখানেক মামলা রয়েছে আদালতে।
এলাকাবাসী জানান, দু’পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ ও সংঘর্ষের কারণে আনু মিয়ার পক্ষের তায়েফ ও জসীম উদ্দিনের পক্ষে সুমন নামের দুইজন দুটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে গ্রামে। তারা তুচ্ছ ঘটনায় কথা-কাটাকাটি হলেই অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করে এলাকায় আতংক ছড়ায়। দুই সপ্তাহ আগে একবার এভাবেই দুই বাহিনীর সংঘর্ষের খবর পেয়ে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু কোন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মঙ্গলবার আনু মিয়ার পক্ষের দায়ের করা একটি অভিযোগের তদন্তে যায় দিরাই থানা পুলিশ। গ্রামবাসী জানান, মামলা তদন্ত শেষে পুলিশ গ্রাম থেকে ফেরার পর আনু মিয়ার পক্ষের তায়েফ তার বাহিনী নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালায়। পরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় তায়েফ বাহিনীর বন্দুকধারীদের গুলি চালানোর একটি ভিডিও ক্লিপ ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ মুহিবুর রহমান চৌধুরী (২৫), আঞ্জু চৌধুরী (২৩), সোহেল চৌধুরী (২৫), জুয়েল চৌধুরী (৪০), আকমল চৌধুরী (৬২), কনর চৌধুরী (৫৫), শুভ চৌধুরী (২৭), ইসলাম উদ্দিন চৌধুরী (৬৫), জাবেদ চৌধুরী (২৫), তাসিম চৌধুরী (২৮), রাবেল চৌধুরী (২৭), জুবেদ চৌধুরী (৩২), মুর্শেদ চৌধুরী (৪২) ও জানে আলম চৌধুরী (২৪) কে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘন্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ব্যাপারে একপক্ষ অপর পক্ষের লোকদের দায়ী করে বক্তব্য দিচ্ছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রশান্ত কুমার দাস বলেন, সংঘর্ষে আহতদের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। দিরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাড়ইল গ্রামের দুইপক্ষের সংঘর্ষ হয়। শুনেছি কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেফতারে গ্রামে অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।