বাজার যথারীতি অস্থির , স্বাভাবিক হয়নি সয়াবিন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৫:৩৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : নানা উদ্যোগের পরও বাজার পরিস্থিতির স্বাভাবিক হয়নি। বরং বিভিন্ন অতি প্রয়োজনীয় পণ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ পরিস্থিতি এখনো ঠিক হয়নি। খুচরা দোকানগুলোতে দু-একটি ব্র্যান্ড ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির সয়াবিন তেল মিলছে না। যা মিলছে তা-ও বাড়তি দামে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চালের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। আলু ও পেঁয়াজের দামও নাগালের বাইরে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দাম বাড়ানো হলেও ডিলাররা এখনো খুচরা দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ শুরু করেননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগতে পারে। সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট শুরু হয়েছে প্রায় এক মাস হতে চলল। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়ায়। সেটা গত সোমবারের কথা। এরপর তিন দিন পার হলেও খুচরা বাজারে তেলের সরবরাহ ঠিক হয়নি।
নগরের বন্দরবাজার, মিরাবাজার ও শিবগঞ্জ ঘুরে হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে শুধু নির্দিষ্ট কিছু ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে। দাম ১৬৭ থেকে ১৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। আর অনেক দোকানে তেল ছিলই না।
এক দোকানী জানান, দুই দিন ধরে তাঁর দোকানে কোনো ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে না। ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা তেলের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। তেল কিনতে না পেরে অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে, ধানের ভরা মৌসুমেও বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বেশি বেড়েছে সরু চালের দাম। যেমন খুচরা পর্যায়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরু প্রজাতির নাজিরশাইল চালের দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ার পর মানভেদে এক কেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮৫ টাকায়। একইভাবে রশিদসহ অন্যান্য মিনিকেট চালের দামও ২-৩ টাকা করে বেড়েছে। অন্যদিকে সরু চালের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে মোটা চালের ওপরও। যেমন ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের মোটা চালের দাম ১-২ টাকা বেড়েছে।
চালের পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের একাধিক বড় মিল থেকে বাজারে চাল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাবে দাম বেড়েছে। চাল ছাড়াও এলাচি, কাজুবাদাম ও কাঠবাদামসহ কয়েকটি মসলা পণ্যেরও দাম বেড়েছে। যেমন ১৫ দিনের ব্যবধানে বাজারে এলাচির দাম কেজিতে অন্তত ৪০০ টাকা বেড়ে ৪ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে। মসলার বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি কমের অজুহাতে ফের বাড়ছে এলাচের দাম।
এছাড়া বাজারে দারচিনি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, জিরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ এক হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, লবঙ্গ এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৬৫০ টাকা।
পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজের কেজিতে ৯০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে একাধিক ক্রেতা বলেন, কিছু সবজি ছাড়া অন্য কোনো পণ্যের দাম সেভাবে কমেনি। বিশেষ করে তেল ও আলুর মূল্য বৃদ্ধি খুব হতাশার। এমনিতে মানুষ অনেক কষ্টে রয়েছে; এর মধ্যে নতুন কোনো পণ্যের দাম বাড়লে আমাদের হতাশা আরও বাড়ে।