আ.লীগ নেতা এড. মিসবাহকে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ে তোলপাড়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:২৬:৪১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে রাতের আধারে অপহরণ করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় সিলেট জুড়ে চলছে তোলপাড়। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে নগরীর সুবিদবাজার এলাকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় কতিপয় যুবক। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সাগরদিঘির পার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
হত্যা মামলাসহ ছাত্র-জনতার উপর হামলার একাধিক মামলার আসামী মিসবাহ সিরাজকে পুলিশের হাতে না দিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। হামলা ও মুক্তিপণ আদায়ের প্রাথমিক সত্যতা পেলেও জড়িতদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি বলে এসএমপি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
তবে এ ব্যাপারে কোন কথা না বলে চুপ রয়েছেন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের পরিবার। একাধিক মামলার আসামী হওয়ায় মামলার ঝামেলায় জড়াতে চাইছেনা তারা। পুলিশ জানিয়েছে মিসবাহ সিরাজ হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী। তাকে পাওয়া মাত্র গ্রেফতার করা হবে। পলাতক আসামীকে পাওয়ার পর পুলিশের হাতে তুলে দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে অপহরণ করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় দুর্বৃত্তপনা। এর সাথে জড়িতদের খুজে বের করতে পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন এসএমপির উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
জানা গেছে, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসায় ফেরার পথে নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে একদল যুবক তার অটোরিকশার গতিরোধ করে। এরপর অস্ত্রের মুখে তাকে অন্য একটি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। এরপর রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা মিসবাহ সিরাজের মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করে। পরে পরিবারের লোকজন দর কষাকষির মাধ্যমে মুক্তিপণের পরিমাণ নির্ধারণ করে নগদ ২৫ লাখ টাকা হস্তান্তর করেন। এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর সাগরদিঘিরপাড় এলাকার শ্মশান সংলগ্ন সড়কের পাশ থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, অপহরণের পর হাতে ও পায়ে আঘাত করা হয়। পরে তাকে নগরীর সোবহানীঘাটে আল হারামাইন হাসপাতালে ভর্তি করে ভোরে অস্ত্রোপচার করা হয়। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে চলে যান মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তার পরিবারের কারো সঙ্গে এরপর থেকে যোগাযোগ করা যায়নি। যে কারণে প্রকৃত ঘটনা কি ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আল হারামাইন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মিসবাহ সিরাজ গুরুতর আহত হয়ে রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন, রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সকাল ১০টায় তিনি চলে যান।
এ ব্যাপারে এসএমপির মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ওপর হামলা হয়েছে। কে বা কারা হামলা করেছে সেটা জানা যায়নি। তিনি আল হারামাইন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে শুনেছি। পরে তিনি একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে চলে গেছেন। তবে কোথায় গেছেন জানা নেই। পুরো বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, তাকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। কারা এর সাথে জড়িত এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তবে কত টাকা মুক্তিপণ দেয়া হয়েছে এ ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। পলাতক আসামী হিসেবে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় দুর্বৃত্তপনা এর সাথে জড়িতদের খুজে বের করতে আমাদের ছায়া অনুসন্ধান চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ পুলিশের সাথে যোগাযোগ না করায় প্রকৃত সত্য জানা যাচ্ছেনা। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এরপর মূল রহস্য উদঘাটন হবে বলেও জানান তিনি।