চুপিসারে ভোলাগঞ্জ বাংকার পরিদর্শন রেলওয়ে ডিজি’র
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৯:০১:৪০ অপরাহ্ন
আব্দুল জলিল, কোম্পানীগঞ্জ: বাংলাদেশ রেলওয়ের অধীনে রয়েছে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে (বাংকার)। ৩৫৯ একর জমি নিয়ে ১৯৬৪ সালে নির্মাণ হয় ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে। সেখান থেকে ছাতক পর্যন্ত চালু হয় রজ্জুপথ। বাংকার এলাকা পাথর অধ্যুষিত হওয়ায় রেলওয়ের জমি থেকে দীর্ঘদিন থেকে পাথর লুটপাট হয়ে আসছে। ৫ আগষ্টের পর সেখানের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবিকে সরিয়ে নেওয়ায় লুটপাটে বিলীন হয়ে গেছে পুরো বাংকার এলাকা। শনিবার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বাংকার এলাকা পরিদর্শনে আসেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন।
স্থানীয় পুলিশ ও সাংবাদিকদের না জানিয়ে তিনি ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে পরিদর্শন করে চলে যান। শিডিউল অনুযায়ী দুপুর ২টায় তার পরিদর্শনের কথা থাকলেও তিনি সকাল সাড়ে ১০টায় পরিদর্শন করেন রোপওয়ে এলাকা। বাংকারের লুটপাট নিয়ে স্থানীয় এবং জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় নিয়মিত নিউজ প্রকাশিত হচ্ছে। রেলওয়ের ডিজির পরিদর্শনে আসার খবরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বাংকারের অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আশায় ছিলেন। তারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য ২টার আগেই সেখানে পৌঁছান। তবে ততক্ষণে তিনি বাংকার এলাকা ত্যাগ করে চলে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংকার) এলাকায় কোন দুর্ঘটনা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে আমাদেরকে সে বিষয়টি দেখতে হয়। কিন্তু এই এলাকা পরিদর্শনে রেলওয়ের মহাপরিচালক আসলেও আমরা সে বিষয়টি জানিনা।
সেখানকার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)-এর ইনচার্জ আশরাফুজ্জামান লষ্কর জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় রেলওয়ের মহাপরিচালক এসেছিলেন। তিনি বাংকার পরিদর্শন করে দেড় ঘন্টার মধ্যে সেখান থেকে চলে গেছেন।
উল্লেখ্য, পাথর পরিবহনে স্থল কিংবা জলযানের বিকল্প হিসেবে ১৯৬৪ সালে ভোলাগঞ্জ থেকে ছাতকে রজ্জুপথ স্থাপন করা হয়। ১১৯টি খুঁটির মাধ্যমে তৈরি হয় রোপলাইন। এর মধ্যে আছে ভোলাগঞ্জ লোডিং স্টেশন (বাংকার) ও ছাতক খালাস স্টেশন। বাংকারের ৩৫৯ একর জমি, অবকাঠামোসহ রেলের স্থাপনা, যন্ত্রপাতি দেখভাল করতে ২০০০ সাল থেকে আনসার বাহিনী দায়িত্বে ছিল। তবে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালে রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আনসার বাহিনীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দায়িত্ব নেয় রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবি। রোপওয়ের খুুঁটি হেলে পড়ায় ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে পড়ে পাথর পরিবহন। এর পর এটি আর চালু করা যায়নি। বন্ধ রোপওয়ের এই জমিতে গত মাস থেকে দিনের বেলা ডিউটি করতেছে আরএনবি সদস্যরা। তবে রাতে তারা ডিউটি না করায় বন্ধ হচ্ছে না বাংকারের জমি থেকে পাথর লুটপাট।