আহলান সাহলান মাহে রমজান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০২:৪৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: পূণ্যময় মাস রমজানে আজ আমরা চতুর্থ দিনে পা রাখলাম। রমজানের রোজাকে ইসলামে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ঠিক সেভাবে ইচ্ছে করে একটি রোজা ছেড়ে দেওয়াকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। আর যদি কেউ কোনো কারণ ছাড়া ইচ্ছে করে রোজা ছেড়ে দেয় তবে এজন্য তাকে একাধারে ৬০ টি রোজা আদায় করতে হবে। তারপরও তা রমজানের একটি রোজার সমান হবে না। যদিও সে পরে সারাজীবন রোজা রাখে।
তবে যারা অসুস্থ বা খুব বৃদ্ধ, যাদের শারীরিক দুর্বলতার কারণে রোজা রাখা খুবই কষ্টদায়ক এবং যারা ভ্রমণে থাকার কারণে রোজা পালন করতে পারেন না, তাদের জন্য রোজার কাজা, কাফফারা ও ফিদ্ইয়া ইত্যাদি বদলা ব্যবস্থা ঠিক করে ইসলামি শরিয়তে সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে কুরআনুল কারীমে সূরা বাক্বারার ১৮৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন ‘নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে’।
যারা নানান অজুহাতে ইচ্ছে করে রমজানে রোজা রাখে না, তাদের শাস্তি কত যে কঠিন হবে তা নবী সা. বলে গিয়েছেন। ইচ্ছা করে রোজা ভঙ্গকারীদের ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে রাসুল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের একদিনের রোজা কোনো অপারগতা বা অসুস্থতা ছাড়া ছেড়ে দেবে সারা জীবনের রোজাও এর ক্ষতিপূরণ হবে না, যদি সে সারা জীবনও রোজা রাখে’।
বিনা কারণে রোজা ভঙ্গ করলে তাকে অবশ্যই কাজা-কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে, ততটি রোজা আদায় করতে হবে। কাজা রোজা একটির পরিবর্তে একটি অর্থাৎ রোজার কাজা হিসেবে শুধু একটি রোজাই যথেষ্ট। কাফফারা আদায় করার তিনটি বিধান রয়েছে। একটি রোজা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজার মাঝে কোনো একটি ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। যদি কারও জন্য শারীরিক কারণে ৬০টি রোজা রাখা সম্ভব না হয় তাহলে সে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খাবার খাওয়াবে।
অনেক কারণে রোজার কাফফারা বা কাজা হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো, কোনো কিছু ইচ্ছা করে পেটে প্রবেশ করালে এবং তা উপকারী হওয়ার ধারণাও যদি থাকে, তা খাদ্য হোক, ঔষধ হোক অথবা এমন কাজ হোক যার আস্বাদ সংগম ক্রিয়ার মতো, তাহলে এসব অবস্থায় কাযা এবং কাফফারা দুই ওয়াজিব হয়।
কোনো কিছু যদি আপনা আপনি পেটের মধ্যে চলে যায়, তার উপকারী হওয়ার ধারণাও না থাকে, অথবা এমন কোনো কাজ করা হলো যার আস্বাদ সংগম ক্রিয়ার মতো নয়, তাহলে শুধু মাত্রা কাজা ওয়াজিব হবে। শুধু রমজানের রোজা নষ্ট হলেই তার কাফফারা ওয়াজিব হয়, রমজান ছাড়া অন্য রোজা নষ্ট হলে তার কাফফারা ওয়াজিব হবে না, তা ভুলক্রমে নষ্ট হোক অথবা ইচ্ছা করে নষ্ট করা হোক। রমজানের কাজা রোজা নষ্ট হলে তার কাফফারা ওয়াজিব হবে না, শুধু রমজান মাসে রোজা নষ্ট হলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। যাদের মধ্যে রোজা ওয়াজিব হওয়ার শর্ত পাওয়া যায় না, তাদের রোজা নষ্ট হলেও কাফফারা ওয়াজিব হবে না। যেমন, মুসাফিরের রোজা, হায়েয নেসাফ ওয়ালী মেয়েদের রোজা। যদিও মুসাফির এবং হায়েয নেফাস ওয়ালী মেয়েলোক রোজার নিয়ত সফর শুরু করার আগে এবং হায়েয নিফাস হওয়ার আগে করে থাকে।
যে কোনো কাজ যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে যায়, যেমন ভুল করে কেউ কিছু খেয়ে নিলো, অথবা যৌন ক্রিয়া করলো, অথবা কুলি করতে হঠাৎ পানি গলার ভেতর চলে গেলো, অথবা কেউ জবরদস্তি করে যৌন ক্রিয়া করালো তাহলে এসব অবস্থায় কাফফারা ওয়াজিব হবে না। কোনো সন্দেহের কারণে কেউ রোজা নষ্ট করলে কাফফারা দিতে হবে।