অস্বস্তি বাড়ছে নিত্যপণ্যে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১:১৩:৩৩ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : চাল, ডাল, ডিম, মুরগি, শাক-সবজি ও মাছসহ প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে গিয়ে সাধারণ মানুষের হাহুতাশ বাড়ছে। শুক্রবার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজি বেড়ে হয়েছে ১৭০-১৮০ টাকা, যা আগে ছিল ১৬০-১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৪০ টাকা। ডিমের দামও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৫০ টাকা, সাদা ডিম ১৪০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার অন্যতম সবজির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। প্রতি কেজি গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, টমেটো ১৭০, করলা ১০০, ঢেঁড়স ৬০, কাঁকরোল ৮০, পটল ৭০, ধুন্দল ৮০, শসা ৭০, ও পেঁপে ৩০-৪০ টাকা দরে। বরবটি, চিচিঙ্গা, গাজরের দাম ৮০-১০০ টাকা। চালের দামেও কোনো স্বস্তি নেই। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮২-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯২ এবং মোটা চাল ৬০-৬৫ টাকায়।দেশি মসুর ডাল প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, যা আগের তুলনায় ২০ টাকা বেশি। ভারতীয় মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০৫ টাকা কেজিতে।মাছের দামও উচ্চমুখী ধারায় রয়েছে। এক কেজি ইলিশ ২২০০ টাকা, মাঝারি আকারের (৫০০-৬০০ গ্রাম) ইলিশ ১৬০০ টাকা এবং দেড় কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ টাকায়। চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪৫০, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০ এবং পাবদা ও শিং বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, ব্যবসায়ীদের একটি শ্রেণি বাজারে কারসাজি করছে। সিন্ডিকেট করে তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে।
ক্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পর্যাপ্ত আমদানি ও মজুত থাকা সত্ত্বেও অনেক পণ্যের অস্বাভাবিক দামের পেছনে রয়েছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাত। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তৎপরতা না থাকায় সাধারণ মানুষ এর খেসারত দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মনিটরিং শুধু ভোক্তা অধিদপ্তরের তদারকিতে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমদানিকারক, পাইকারি ও উৎপাদক পর্যায়ে সমন্বিত নজরদারি জরুরি।
বাজার করতে আসা একাধিক ক্রেতা বলেন, বাজারে কোনো পণ্যে হাত দিতে ভয় লাগে। দরদামের সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীরা যে দাম বলেন, সেভাবেই কিনতে হচ্ছে। সব কিছুর দাম বাড়তি। মনিটরিং না থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।
ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। টানা বৃষ্টি, মৌসুম শেষের দিকে হওয়ার কারণে খরচ বেড়েছে।ভোক্তা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে বাজার মনিটরিং দুর্বল এবং মৌসুমি কারণে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অস্থির পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)-এর এক গবেষকের মতে, সরকারকে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে হবে, আমদানি সহজ করতে হবে এবং নিয়মিত বাজার মনিটরিং চালু রাখতে হবে। না হলে ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি আবহাওয়া অনুকূলে না থাকে তবে আগামি কয়েক সপ্তাহে দাম আরও বাড়তে পারে। তখন নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য প্রোটিন তো দূরের কথা, ভাতের সঙ্গে তরকারি খাওয়াও কঠিন হয়ে পড়বে।







