গাজায় ২৩৩ ইমাম নিহত ক্ষতিগ্রস্ত ৮২৮টি মসজিদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ৯:৩৩:৩৫ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : গাজায় ইসরায়েলি অভিযান শুধুমাত্র সামরিক অবকাঠামোর ওপরই সীমাবদ্ধ নয়; ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকসহ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ভিত্তির ওপরও একটি পরিকল্পিত আঘাত।
গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামলায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত ২৩৩ জন ইমাম ও ইসলামি ধর্মপ্রচারক নিহত হয়েছেন। এছাড়াও, ৮২৮টি মসজিদ সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ১৬৭টি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলার লক্ষ্যবস্তু -ধর্মীয় নেতা ও উপাসনালয় :
গাজার মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতেহ আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই আক্রমণগুলো পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ধর্মীয় পরিচয় ও জাতীয় ঐক্যকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ইমাম ও আলেমগণ শুধু ধর্মীয় নেতা নন; তাঁরা সমাজের দিকনির্দেশক, জাতীয় চেতনার ধারক এবং ঐক্যের প্রতীক। ইসরায়েল তাঁদের নির্মূল করে ফিলিস্তিনিদের আত্মিক শক্তিকেই ভেঙে দিতে চায়।’
এই হামলা থেকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও রেহাই পায়নি। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় তিনটি গির্জা ধ্বংস এবং ২১ জন খ্রিস্টান ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার মিডিয়া অফিস।
ধ্বংসের লক্ষ্য: ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক স্মৃতি মুছে ফেলা
গাজার শতাব্দী প্রাচীন মসজিদ ও গির্জাগুলো ফিলিস্তিনিদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের জীবন্ত স্মারক। এসব স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে একটি জাতির অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যকার সেতুবন্ধন ছিন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ :
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও রোম স্ট্যাটিউট অনুযায়ী, ধর্মীয় স্থান, উপাসনালয় এবং ধর্মীয় নেতাদের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল। যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের টানা আহ্বান এবং নিন্দার পরও ইসরায়েলের হামলা আরও তীব্রতর হচ্ছে, যার ফলে গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর আকার ধারণ করছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ধরনের হামলার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত চালানোর আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এসব অপরাধের দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায়।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড, আনাদোলু এজেন্সি, গাজা মিডিয়া অফিস।