জেন-জিদের বিক্ষোভে উত্তাল নেপাল, নিহত অন্তত ১৬
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:২৬:০৫ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নেপাল সরকার। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে কার্যকর হওয়া এ সিদ্ধান্তে এক ডজনের বেশি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
নেপাল সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে রাজধানী কাঠমান্ডুতে তরুণ সমাজের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় পুলিশের প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগে কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন পক্ষ নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসি’র।
দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের দাবি অনুযায়ী, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর আগে নতুনবানেশ্বরের সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহনচন্দ্র রেগমি জানিয়েছেন, সেখানে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, মহাঙ্কালস্থ ট্রমা সেন্টারের প্রধান মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. বদ্রি রিজাল জানান, দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
প্রতিবাদী র্যালির সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করে। কিছু বিক্ষোভকারী সংসদ ভবনে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে।
রেগমির দেওয়া তথ্যে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে একজনের বয়স আনুমানিক ৩৫-৪০ বছর এবং অপরজনের বয়স প্রায় ২০-২৫ বছর। ডা. রিজাল জানান, এখানে ৩০ জনের বেশি আহতকে আনা হয়েছে। দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে পৌঁছানো হয়। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এর আগে সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর দীপক পাওডেল জানান, শুধু তাদের হাসপাতালে ১০০ জনের বেশি আহতকে আনা হয়। অধিকাংশের শরীরে রাবার বুলেটের আঘাত রয়েছে।
আহতের সংখ্যা এত বেশি যে সিভিল হাসপাতাল অনেক রোগীকে অন্যত্র পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের বেশিরভাগকে সিভিল হাসপাতাল ও বীর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সাইনামঙ্গলস্থিত কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে অনেককে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
কাঠমান্ডু উপত্যকা পুলিশ কার্যালয়ের মুখপাত্র শেখর খানাল এ বিষয়ে জানান, ‘কতজন আহত হয়েছেন তা এখনও হিসাব করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারী উভয়পক্ষেই অনেকে আহত হয়েছেন।’
সরকার কর্তৃক কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশাধিকার বন্ধ এবং রাজনৈতিক দুর্নীতির প্রতিবাদে মূলত ‘জেন জি’ নামে পরিচিত তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নামে। সংঘর্ষের পর সংসদ ভবনের চারপাশসহ বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশাধিকার বন্ধের বিষয়ে মানবাধিকার ও গণমাধ্যম সংগঠনগুলো এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা অলি সরকারের এই সিদ্ধান্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দিচ্ছে এবং ব্যবসার ক্ষতি করছে।
সরকার জানিয়েছে, মোট ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ- যার মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স, রেডিট, লিংকডইন, পিন্টারেস্ট ও সিগন্যাল রয়েছে- নতুন আইন অনুযায়ী নিবন্ধন না করায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।