তালেবানমন্ত্রীর প্রথম ভারত সফর, পতাকা ইস্যুতে অস্বস্তিতে দিল্লি
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ৯:১১:৪১ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : আফগানিস্তানের জাতিসংঘ-নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সপ্তাহব্যাপী ভারত সফর শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর কোনো শীর্ষ তালেবান নেতার এটাই প্রথম ভারত সফর। মুত্তাকির এই সফর সম্ভব হয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ থেকে তার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ছাড় পাওয়ায়। ভারতের পক্ষ থেকে এই সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিলেও কূটনৈতিক মহলে এখন আলোচনায় এসেছে তালেবানের পতাকা ব্যবহার জনিত অস্বস্তিকর এক পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এ খবর জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতের কূটনৈতিক দোটানা :
ভারত এখনও তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে, তালেবানের সাদা পটভূমিতে কালো ‘শাহাদা’ (ইসলামিক ঘোষণা) লেখা পতাকাটিকে সরকারি মর্যাদা দিতে পারছে না নয়াদিল্লি। কিন্তু কূটনৈতিক শিষ্টাচার অনুযায়ী, সফরকারী নেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ছবি তোলার সময় তার দেশের পতাকা রাখা বাধ্যতামূলক। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ ব্লকের (ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর) কর্মকর্তারা একটি কঠিন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন।
নয়াদিল্লির আফগান দূতাবাসে এখনও ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সরকারের আমলের পুরোনো তিনরঙা পতাকাটিই উড়ছে। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে দুবাইতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে মুত্তাকির বৈঠকের সময়, এই সমস্যা এড়াতে কোনো পতাকাই ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু দেশের রাজধানীতে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের ক্ষেত্রে প্রটোকল এড়িয়ে চলা কঠিন।
সফরের আঞ্চলিক গুরুত্ব :
মুত্তাকির এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন নয়াদিল্লি কাবুলের তালেবান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী। সফরকালে আফগান মন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই আলোচনা আঞ্চলিক কূটনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং ইসলামাবাদসহ প্রতিবেশী দেশগুলো নিবিড়ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করছে।
ভারত যদিও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবুও মানবিক সহায়তা ও বাণিজ্যের সুবিধার্থে কাবুলে একটি ছোট মিশন চালু রেখেছে। মুত্তাকির এই সফর ভারতের এই নীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে, যেখানে নয়াদিল্লি বারবার জোর দিচ্ছে যে আফগানিস্তানের মাটি যেন কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত না হয়। সম্প্রতি রাশিয়া ও চীন সহ নয়টি দেশের সঙ্গে ভারতের যোগ দিয়ে আফগানিস্তানে বিদেশি সামরিক পরিকাঠামো মোতায়েনের চেষ্টার বিরোধিতা করা আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে এই সফরের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।