শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ৯:১২:৫৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও সিলেটের কৃতি সন্তান সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেল ৫টায় ইন্তেকাল করেন তিনি।
অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম গত শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে যাওয়ার পথে গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাড়িচালক একজনের সহায়তায় তাঁকে পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে নেন। খবর পেয়ে মাজহারুল ইসলামসহ অন্যরা সেখানে যান। সেখান থেকে তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয়। পরে সেখানে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে স্টেন্টিং করা (রিং পরানো) হয়।
গত শনিবার থেকে অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকে, ফুসফুসে পানি জমার কারণে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে রোববার সন্ধ্যায় লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল।
তবে পরে আবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পুনরায় লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল ৫টায় চিকিৎসকেরা লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নিয়ে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন বলে মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে বলে তাঁর পরিবার, বন্ধু ও স্বজনেরা জানিয়েছেন। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ শনিবার সকাল ১১টায় তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। এরপর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা হবে। পরে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হতে পারে।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্ম ১৯৫১ সালে সিলেট শহরে । তার পিতার নাম সৈয়দ আমীরুল ইসলাম এবং মাতা রাবেয়া খাতুন। তিনি সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সিলেট এমসি কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়েটস-এর কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব বিষয়ে পিএইচডি করেন।
পেশাগত জীবনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অবসরের পর যোগ দেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক পান।
তার বইয়ের মধ্যে রয়েছে—পুস্তক প্রকাশনা ও সম্পাদনা প্রসঙ্গ, থাকা না থাকার গল্প, কাচ ভাঙ্গা রাতের গল্প, অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প, আধখানা মানুষ্য, দিনরাত্রিগুলি, আজগুবি রাত, তিন পর্বের জীবন, নন্দনতত্ত্ব, কতিপয় প্রবন্ধ, অলস দিনের হাওয়া।